নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই লাগামহীন তোলাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে মোল্লা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তদারকি সরকারের উপদেষ্টারা। আর সেই তোলাবাজির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে শেখ হাসিনা উচ্ছেদ আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তদারকি সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা হিসাবে গত ৯ মাসে হাজার কোটি টাকার বেশি তোলা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এমনকি তোলাবাজি ও টেন্ডারবাজির জন্য নিজের বাবাকে দিয়েও ঠিকাদারি লাইসেন্স করিয়ে কোটি-কোটি টাকার কাজ আদায় করছিলেন। সেই কুকীর্তি ফাঁস করে দিয়েছেন সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক সংবাদদাতা। আর কুকীর্তি ফাঁস হতেই বাবাকে ‘কাঠগড়ায়’ তুলে নিজেকে সাধু সাজানোর চেষ্টায় নেমেছেন ‘তোলাবাজ’ উপদেষ্টা। সেই সঙ্গে বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্সের জন্য দুঃখপ্রকাশও করেছেন। যদিও তোলাবাজির দায়ে অবিলম্বে যুব উপদেষ্টার পদ থেকে আসিফকে গলাধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নেটা নাগরিকরা।

টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিয়োগের নাম করে কয়েক কোটি টাকা তোলাবাজির অভিযোগে কয়েকদিন আগেই আসিফের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। যদিও তার দাবি, যুব উপদেষ্টার নির্দেশেই টেন্ডার ও নিয়োগের নামে অর্থ নিয়েছেন তিনি। ওই অর্থের সিংহভাগই গিয়েছে উপদেষ্টার বাবার কাছে। গতকাল বুধবার আল-জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের নিজের ফেসবুকে যুব উপদেষ্টার বাবার নামে ঠিকাদারি লাইসেন্সের একটি ছবি আপলোড করেন। তাতে তিনি লেখেন, ‘স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবা বিল্লাল হোসেনের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের একটি ঠিকাদারি তালিকাভুক্তির কপি হাতে এসেছে। লাইসেন্সটি যাচাই করে দেখা যায়, এ বছরের ১৬ মার্চ নির্বাহী প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (কুমিল্লা) লাইসেন্সটি ইস‍্যু করেছেন।’

আর ওই ফেসবুক পোস্ট দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। বাবাকে শিখণ্ডী হিসেবে দাঁড় করিয়ে যুব উপদেষ্টার তোলাবাজির বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়ে যায়। পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক কীভাবে ঠিকাদারি লাইসেন্স পেলেন তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তোলেন। সমালোচনার মুখে পড়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ফেসবুকে এক হাস্যকর সাফাই দিয়েছেন ইউনূসের তোলাবাজ উপদেষ্টা। তাতে তিনি লিখেছেন ‘স্থানীয় একজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ার সুবিধার্থে বাবার পরিচয় ব্যবহার করার জন্য বাবাকে লাইসেন্স করার পরামর্শ দেন। বাবাও তার কথায় জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার থেকে একটি ঠিকাদারি লাইসেন্স করেন। যদিও ওই লাইসেন্স ব্যবহার করে কোনও কাজ নেওয়া হয়নি। বাবা ভুল করে লাইসেন্স করেছে।’ ওই ফেসবুক পোস্টের নিচে অনেকেই লেখেন, ‘চোররা ধরা পড়লে এমন কথাই বলে।’  ইতিমধ্যেই আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে তোলাবাজির টাকা দিয়ে সুই‍ৎজারল্যান্ড, দুবাই-সহ একাধিক দেশে বাড়ি কেনার অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছেও একাধিক ব্যবসায়ী ও শিল্প সংস্থার মালিক অভিযোগ জানিয়েছেন।