নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: সেনা বিদ্রোহে শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পরেই অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। অবাধে চলছে লুঠতরাজ, খুন-খারাপি। ভারত বিদ্বেষ তুঙ্গে পৌঁছেছে। নিরাপত্তার কারণে বুধবার সকালেই বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাস ও সহায়ক দূতাবাস থেকে কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে নিয়েছিল মোদি সরকার। বিশেষ বিমানেই নয়াদিল্লি ফিরে গিয়েছেন দুই শতাধিক আধিকারিক ও কর্মী। তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বুধবার রাত থেকে বাংলাদেশে থাকা সব ভিসা সেন্টার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিল মোদি সরকার। অর্থা‍ৎ আপাতত বাংলাদেশিদের আর ভিসা দেওয়া হবে না।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশ অশান্ত হওয়ার পরেই বুধবার পর্যন্ত (৭ অগস্ট) ঢাকা, খুলনা, সিলেট, রাজশাহী, চট্টগ্রাম-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকা ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দেয় ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। আজ বৃহস্পতিবার থেকে ফের ভিসার আবেদন জমা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বুধবার রাতেই ভারতীয ভিসা সেন্টারের ওয়েবসাইটে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব আইভিএসিএস (ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র) বন্ধ থাকবে। পরবর্তী আবেদনের তারিখ এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে এবং পরবর্তী কার্যদিবসে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত রবিবার (৪ আগস্ট) জামায়েতপন্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ কর্মসূচি ঘিরে গোটা বাংলাদেশ রক্তে ভাসার পরেই দেশের নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছিল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের তরফে এক বার্তায় বাংলাদেশে অবস্থান করা ভারতীয় নাগরিক ও শিক্ষার্থীদের ঘোরাঘুরি করার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।  

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, যেভাবে দেশের বিভিন্ন জেল থেকে জেএমবি, হুজি জঙ্গিদের মুক্তি দিতে শুরু করেছে সেনাবাহিনী, তাতে শঙ্কিত ভারত সরকার। তাছাড়া বুধবার সকালেই সমস্ত জঙ্গি সংগঠনের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরে সংসদ ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জঙ্গি  সংগঠন হিযবুত তাহরির সদস্যরা। দুই ঘটনায় সিঁদূরে মেঘ দেখছে মোদি সরকার। ভিসা নিয়ে জঙ্গিরা ভারতে ঢুকে নাশকতামূলক কাজকর্ম চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করেই ভিসা সেন্টার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।