নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: পাঁচ বছর দেশের ভোট পরিচালনার দায়িত্বভার তাঁর কাঁধে ছিল। যদিও অন্যতম নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বিভিন্ন ভোট নিয়ে নানা অভিযোগ তুলে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন বিদায়ী নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। সোমবার নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব থেকে বিদায় নেওয়ার প্রাক্কালে ফের বিস্ফোরক তিনি। সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদের ভোট ঘিরে যে সব ঘটনা ঘটেছে তার উদাহরণ টেনে বলেছেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে দেশে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রের লাশ পড়ে রয়েছে।’ শুধু তাই নয়, দেশে মানবাধিকার নেই বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
এদিন দায়িত্ব থেকে বিদায় নেওয়ার আগে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন বসে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছিলেন বিদায়ী নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। ওই সাংবাদিক সম্মেলনের শুরু থেকেই বর্তমান সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেন তিনি। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে যে সব ঘটনা ঘটেছে, তার সমালোচনা করে বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রের লাশ পড়ে রয়েছে। নির্বাচনের নামে দেশজুড়ে এমন অরাজকতা কখনই কাঙ্ক্ষিত ছিল না। তৃণমূল পর্যায়ে এই নির্বাচন দ্বন্দ্ব-সংঘাতের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে দিয়েছে।’
শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ ওঠা সত্বেও যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি সে বিষয়টি উল্লেখ করে বিদায়ী নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের বড় দুর্বলতা হলো, ‘ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব, জালিয়াতির অভিযোগ উঠলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।’ নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন আইন প্রণয়ন করার পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি। বিদায়ী নির্বাচন কমিশনারের কথায়, ‘অবাধ, সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য ভোটের বাধা দূর করতে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার প্রয়োজন। এজন্য সংবিধান ও আইনের পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সেই আইন অবশ্যই প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।’