নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে করোনাভাইরাসের দৈনিক সংক্রমণ। গত এক সপ্তাহে আগের সপ্তাহের তুলনায় দেশে ১১৫ শতাংশ বেড়েছে সংক্রমণ। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় কড়া বিধি-নিষেধ জারির সুপারিশ করেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। তবুও দেশে লকডাউন জারি করা নিয়ে দোটানায় প্রশাসনের শীর্ষ মহল। লকডাউন জারি হলে অর্থনীতি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় কঠোর পথে হাঁটতে রাজি হচ্ছেন না সরকারের নীতি-নির্ধারক। রবিবার বিদেশ মন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ফের একবার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, এই মুহুর্তে লকডাউন জারি হচ্ছে না।
গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই দেশে ফের প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। বেশ কয়েক মাস বাদে দৈনিক সংক্রমণ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। যেভাবে লাফিয়ে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে সিঁদূরে মেঘ দেখছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের আধিকারিকরা। রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্ত্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘গত এক সপ্তাহে দেশে নতুন করে ৬ হাজার ৩০০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এই সংখ্যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩ হাজার ৩৭৬ জন বেশি। অর্থাৎ এক সপ্তাহে সংক্রমণ প্রায় ১১৫ শতাংশ বেড়েছে। সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সপ্তাহে মারণ ভাইরাসের ছোবোলে প্রাণ হারিয়েছেন ২৩ জন। আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। পাশাপাশি শনাক্তের হার অর্থাৎ পজিটিভিটি রেটও উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকেও শনাক্তের হার ২ শতাংশের নিচে ছিল। শনিবার তা তিন গুণ বেড়ে প্রায় ৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
দৈনিক সংক্রমণ লাগাতার বেড়ে চললেও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা অবশ্য উল্লেখযোগ্য হারে না বাড়ায় অনেকটাই স্বস্তিতে রয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের শীর্ষ আধিকারিকরা। পরিসংখ্যান বলছে, রাজধানী ঢাকাতে কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য ৪ হাজার ৬১৬টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বর্তমানে তার মধ্যে ৪ হাজার ১৭৯টি খালি রয়েছে। ডেল্টা প্রজাতির সংক্রমণের সময়ে যেভাবে আক্সিজেনের সঙ্কট চলেছিল, তা যাতে বর্তমান সময়ে দেখা না দেয়, সে কারণে দেশের ১১৮টি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।