নিজস্ব প্রতিনিধি: ক্রমশই দূর হচ্ছে উদ্বেগ আর আশঙ্কার মেঘ। রাজ্যে করোনা সংক্রমণের ক্রমেই উন্নতি ঘটছে। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের তুলনায় দৈনিক সংক্রমণ শুধু কমেইনি। এক ধাকায় পাঁচ হাজারের গণ্ডির নিচে নেমেছে। একদিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন চার হাজার ৫৪৬ জন। স্বস্তি দিয়ে শনাক্ত বা সংক্রমণের হার আট দশমিক ৮৪ শতাংশে নেমেছে। দৈনিক সংক্রমণে কলকাতাকে টপকে শীর্ষে উঠে এসেছে উত্তর ২৪ পরগনা। কলকাতায় দৈনিক সংক্রমণ পাঁচশোর গণ্ডির নিচে নেমেছে।
গঙ্গাসাগর মেলার পরেই রাজ্যে করোনার সুনামি বয়ে যাবে বলে স্বঘোষিত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছিলেন। কিন্তু সেই বিশেষজ্ঞরা যে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কতটা অজ্ঞ, তা সংক্রমণ চিত্রই বুঝিয়ে দিচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যে করোনা সংক্রমণের অভূতপূর্ব উন্নতি হচ্ছে। বেলাগাম সংক্রমণ চালানোর পরে গতকাল রবিবারই প্রাণঘাতী ভাইরাসের দৈনিক সংক্রমণ ছয় হাজারের ঘরে নেমে এসেছিল। সেই সঙ্গে শনাক্তের হারও ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।
সোমবার রাতে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে প্রকাশিত দৈনিক করোনা বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ‘গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের তুলনায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কমেছে। একদিনে নতুন করে আরও ৫১ হাজার ৪২১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নয়া নমুনা পরীক্ষায় সংক্রমণের হার বা পজিটিভিটি রেট দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৫৪৬ জন। এ নিয়ে রাজ্যে করোনায় মোট আক্রান্ত হলেন ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৭৯১ জন। পাশাপাশি মারণ ভাইরাসের ছোবলে নতুন করে মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়েছেন ৩৭ জন। এ নিয়ে রাজ্যে করোনার বলি হলেন ২০ হাজার ৩৭৫ জন।’
গত ২৪ ঘন্টায় কলকাতার করোনা পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। দীর্ঘদিন বাদে সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষস্থান থেকে দ্বিতীয়স্থানে নেমে এসেছে মহানগরী। কল্লোলিনী তিলোত্তমায় একদিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯৬ জন। প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ জন। দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর নিরিখে শীর্ষে উঠে এসেছে উত্তর ২৪ পরগনা। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া জেলাতে একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭৮ জন। আর মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়েছেন ১৪ জন। হাওড়ায় ১৭২ জন, হুগলিতে ২৮০ জন এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২৭৮ জনের শরীরে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
সুস্থতার হার এবং সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যাও অনেকটা আশার আলো জাগাচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ‘গত ২৪ ঘন্টায় মারণ ভাইরাসকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২০ হাজার ১৫৭ জন। এ নিয়ে প্রাণঘাতী ভাইরাসকে জয় করলেন ১৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮১ জন। সুস্থতার হার বেড়ে হয়েছে ৯৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। একদিনে অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা কমেছে ১৫ হাজার ৬৪৮টি। ফলে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা এক লাখের গণ্ডির নিচে নেমে এসেছে। এই মুহুর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৯৪ হাজার ৫৩৫ জন।’