নিজস্ব প্রতিনিধি: মাত্র ২৪ ঘন্টাতেই উধাও স্বস্তি। দুর্গাপুজোর সপ্তমীর সন্ধ্যায় কার্যত উদ্বেগের খবরই দিল রাজ্যের দৈনিক করোনা বুলেটিন। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের তুলনায় শুধুমাত্র দৈনিক সংক্রমণই বাড়েনি, শনাক্তের হারও এক লহমায় আড়াই শতাংশের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। আর এই পরিসংখ্যানেই অশনিসঙ্কেত দেখছেন চিকিৎসকরা।
গত কয়েকদিন ধরেই পুজো উপলক্ষে জয়জোয়ারে ভাসছে মহানগরী। উত্তর থেকে দক্ষিণ-প্রতিটি মণ্ডপেই ভিড় উপচে পড়ছে। সবথেকে বিষ্ময়ের হল, অধিকাংশ দর্শনার্থীর মুখে মাস্ক নেই। শারীরিক দুরত্ব বিধিও শিঁকেয় উঠেছে। আর ওই দৃশ্য দেখে বারবারই আঁতকে উঠেছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা আশঙ্কাপ্রকাশ করেছিলেন, এবারের দুর্গাপুজো রাজ্যে করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে সুপারস্পেডার হয়ে উঠতে পারে।
চিকিৎসকদের সেই আশঙ্কা যে খুব একটা অমূলক নয়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের করোনা বুলেটিনেই তা প্রমাণিত। এদিন সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত করোনা বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ‘গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের তুলনায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। একদিনে নতুন করে ৩০ হাজার ১৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নয়া নমুনা পরীক্ষায় আরও ৭৬৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে রাজ্যে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ লক্ষ ৭৭ হাজার ৭১১ জনে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার অর্থাৎ পজিটিভিটি রেট দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৫৬ শতাংশে। মারণ ভাইরাসের ছোবলে একদিনে করোনার মৃত্যুমিছিলে সামিল হয়েছেন ১০ জন। এ নিয়ে রাজ্যে করোনার বলি হলেন ১৮ হাজার ৯২৪ জন।’
স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ‘গত ২৪ ঘন্টায় করোনাকে হারিয়ে নতুন করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭৩৫ জন। এ নিয়ে রাজ্যে এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হলেন ১৫ লক্ষ ৫১ হাজার ১১৫ জন। সুস্থতার হার কমে দাঁড়িয়েছে ৯৮ দশমিক ৩১ শতাংশে। একদিনে অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা বেড়েছে ২৩টি। যার ফলে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৬৭২ জনে।’
কলকাতা মহানগরীর কোভিড চিত্র উদ্বেগ বাড়িয়ে চলেছে। গত ২৪ ঘন্টায় কল্লোলিনী তিলোত্তমায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৮০ জন। আর মারা গিয়েছেন ২ জন। দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে কলকাতার পিছনে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া জেলায় একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১২৬ জন আর প্রাণ হারিয়েছেন ২ জন।