এই মুহূর্তে




বাবা ছিলেন লাদেন ঘনিষ্ঠ জঙ্গি নেতা, যুদ্ধের বাজারে পাকিস্তান সেনার মুখ ছেলে




নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়া দিল্লি: পাকিস্তানের সামরিক প্রতিষ্ঠান যে জেহাদি ও সন্ত্রাসী উপাদানের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত তার এক জ্জ্বলন্ত উদাহরণ হলেন আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক তিনতারা বিশিষ্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরি। ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংকট সম্পর্কে বিশ্বকে তিনিই দায়িত্ব নিয়ে জানিয়েছেন। এই আহমেদ শরিফ হলেন জাতিসংঘের ঘোষিত সন্ত্রাসী সুলতান বশিরউদ্দিন মাহমুদের ছেলে। তিনি ছিলেন আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের সহযোগী।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই কাজটি সবচেয়ে বেশি করছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরি। তিনি পাকিস্তানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন। যার বাবা আলকায়দা প্রধানের সহযোগী ছিলেন, তাঁর ছেলে নাকি আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আল-কায়েদার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সেখানকার সন্ত্রাসবাদীর ‘সুপুত্র’ আজ সারা বিশ্বের সামনে কাঁদুনি গাইছেন পাকিস্তান ‘সন্ত্রাসবাদের অসহায় শিকার’ বলে।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতে জিহাদি মিশ্রণের আরও এক উদাহরণ হলেন সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির। মুনিরের বাবা একজন ধর্মগুরু ছিলেন, সেই সঙ্গে মাদ্রাসায় পড়াতেন। আর আহমেদ শরিফ চৌধুরির বাবা প্রথম জীবনে ছিলেন একজন পারমাণবিক বিজ্ঞানী। পরে তিনি দুর্বৃত্তের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

আবদুল কাদির খানকে পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির জনক বলা হয়। তিনি নেদারল্যান্ডস থেকে চুরি করা নীলনকশার উপর ভিত্তি করে পাকিস্তানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং গ্যাস সেন্ট্রিফিউজ প্রযুক্তির বিকাশ ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু উচ্চশিক্ষিত সুলতান বশিরউদ্দিন মাহমুদ ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের ‘ডার্টি বম্ব’ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

পাকিস্তানি বিজ্ঞানীদের উপর সবসময় নজরদারি ছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলির। তারা যখন জানতে পারে যে একজন পারমাণবিক বিজ্ঞানী আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে দেখা করেছেন, তখন আমেরিকা বেশ ভীত হয়ে পড়ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনওই চায়নি আল-কায়েদা বা তার সহযোগীদের কাছে পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের সুযোগ থাকুক। তাই তারা দ্রুত পদক্ষেপ করে।

২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হামলা হয়। একই বছরের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ মাহমুদকে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আল-কায়েদা নিষেধাজ্ঞা কমিটির পৃষ্ঠায় লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরির বাবার নাম জঙ্গি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

আল-কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেন এবং তালেবানের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের জন্য ২০০১ সালের ২৪শে ডিসেম্বর নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা কমিটি মাহমুদকে সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠে গুরুতর অভিযোগ।

শুধু মার্কিন যুক্তিরাষ্ট্র নয়, মাহমুদ এর আগে পাকিস্তানে তার সহকর্মীদেরও ভীত করে তুলেছিলেন। ২০০৯ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদন অনুসারে বশিরউদ্দিন মাহমিদের ধর্মীয় তীব্রতা, ইসলামী চরমপন্থার প্রতি তাঁর সহানুভূতি সহকর্মীদের বেশ ভয় পাইয়েছিল। জাতিসংঘের আল-কায়েদা নিষেধাজ্ঞা কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে, ওসামা বিন লাদেন এবং তালেবানদের রাসায়নিক, জৈবিক এবং পারমাণবিক অস্ত্র সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করেছিলেন এই ব্যক্তি।

পরবর্তী এক বৈঠকে ওসামা বিন লাদেনের এক সহযোগী ইঙ্গিত দেন যে তাঁর কাছে পারমাণবিক পদার্থ আছে। তিনি জানতে চান কিভাবে এটি ব্যবহার করে অস্ত্র তৈরি করা যায়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে, “বশিরুদ্দিন পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং পারমাণবিক অস্ত্রের প্রভাব সম্পর্কে তথ্য প্রদান করতেন।” ২০০১ সালে মাহমুদকে গ্রেফতার করা হয়। এফবিআইয়ের নির্দেশে তদন্ত শুরু হলে মাহমুদ স্বীকার করেন যে তিনি ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে দেখা করতেন।

ওসামা ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী। ৯/১১ হামলার নেপথ্যে ছিল তাঁরই মস্তিষ্ক। আমেরিকার মাটিতে এর থেকে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা আর হয়নি।  মার্কিনি চাপের মুখে পড়ে পাকিস্তানের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা, ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) ২০০১ সালে মাহমুদকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বাধ্য হয়।

সুতরাং, যখন বিশ্ববাসীর কাছে বর্তমান পাক ডিজি আইএসপিআর লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরি নিজেদের অসহায় দাবি করেন, তখন সকলের মনে রাখা উচিত তিনি কার উত্তরপুরুষ। সেই দেশই বা কেমন যারা একজন সন্ত্রাসীর পুত্রকে ডিজি’র মতো দায়িত্বশীল পদে রাখে। আহমেদ শরিফ চৌধুরি এমন একজন বিজ্ঞানী থেকে সন্ত্রাসীতে পরিণত হওয়া ব্যক্তির ছেলে যিনি আল-কায়েদাকে পারমাণবিক বোমা উপহার দিয়ে বিশ্বকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

জামিন মিলতেই গণধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের নিয়ে বিজয় মিছিল, লজ্জার ঘটনা কর্নাটকে

জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার আপ বিধায়ক রমন অরোরা

সোনিয়া-রাহুলের সংস্থায় কংগ্রেস নেতাদের অনুদান দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, দাবি ইডির

‘কোটাতেই শুধু কেন পড়ুয়ারা আত্মহত্যা করছে?’, রাজস্থান সরকারকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের

মোল্লা ইউনূসের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন বাংলাদেশের এই ব্যক্তি

এক বছরে কতটা প্রত্যাশা পূরণ? জনতা জনার্দনের রায় জানতে সমীক্ষা চালাচ্ছে oneindia

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ