নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের আগে চরম ধাক্কা খেলেন বর্ষীয়ান মরাঠা রাজনীতিবিদ শরদ পওয়ার। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন অজিত পওয়ারের নেতৃত্বাধীন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীকেই আসল এনসিপি বলে মান্যতা দিয়েছে। একই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছে, এনসিপির নাম ব্যবহার এবং প্রতীক ব্যবহারের অধিকার পাবে অজিত পওয়ারের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, লোকসভা ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে জোর ধাক্কা খেলেন শরদ পওয়ার। নিজের হাতে যে দল গড়েছিলেন সেই দলের নেতৃত্ব শুধু হারালেনই না, তাঁকে নতুন করে রাজনৈতিক দল গড়তে হবে এবং অন্য প্রতীক চিহ্নে নির্বাচন লড়তে হবে। প্রতিবেদন প্রকাশ পর্যন্ত কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে শরদ পওয়ার গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
গত বছরের ২ জুলাই দলের দুই তৃতীয়াংশের বেশি বিধায়ককে ভাঙিয়ে নিয়ে মহারাষ্ট্রে সেনা-বিজেপি জোট সরকারে সামিল হয়েছিলেন অজিত পওয়ার। দল ভাঙানোর পুরস্কার হিসাবে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রীর পদও পেয়েছিলেন। দল ভাঙার পরে শরদ পওয়ার এবং অজিত পওয়ার গোষ্ঠী নিজেদের আসল এনসিপি হিসাবে দাবি করে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল। গত ছয় মাস ধরে নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজেদের দাবির স্বপক্ষে একাধিক যুক্তি পেশ করেছিল দুই গোষ্ঠীই। হলফনামা জমা দেওয়ার পাশাপাশি শুনানিতেও অংশ নিয়েছিলেন দুই পক্ষের আইনজীবীরা। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে এদিন এনসিপির মালিকানা নিয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
অজিত পওয়ারের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীকেই আসল এনসিপি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এনসিপির নির্বাচনী প্রতীক ‘ঘড়ি’-ও বরাদ্দ করা হয়েছে। অর্থাৎ আগামী লোকসভা ভোটে ‘ঘড়ি’ প্রতীক নিয়ে লড়বেন অজিত শিবিরের প্রার্থীরা। ফলে রাজনৈতিকভাবে অনেকটাই অ্যাডভান্টেজ পেয়ে গেলেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী। সোনিয়া গান্ধির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে একদিন পি এ সাংমা, তারিক আনোয়ারদের নিয়ে যে দল গড়েছিলেন এদিন নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে সেই দলের নিয়ন্ত্রণ হারালেন শরদ পওয়ার।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে শরদ পওয়ার গোষ্ঠীকে আগামিকাল বুধবার বেলা চারটের মধ্যে তাদের দলের জন্য সম্ভাব্য তিনটি নাম এবং তিনটি প্রতীক জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রেই শিবসেনায় ভাঙনের পরে একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীকেই আসল শিবসেনা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। শিবসেনার নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহারের অধিকারও পেয়েছে শিন্ডেসেনা।