নিজস্ব প্রতিনিধি: গত রবিবার ওড়িশা এবং অন্ধপ্রদেশের উপকূলে তাণ্ডব চালানোর পর ধরে নেওয়া হয়েছিল সাইক্লোন গুলাব তার শক্তি হারিয়েছে। অর্থাৎ এবারের মত এই ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে রেহাই মিলল। কিন্তু আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, ঘূর্ণিঝড় গুলাবের পুনর্জন্ম হয়েছে। এবার এই ঘূর্ণিঝড় ‘শাহিন’ নাম নিয়ে তাণ্ডব চালাতে চলেছে ছত্রিশগড়, তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাতে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই শাহিনের শক্তি বৃদ্ধি হবে বলে খবর। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই শুরু হবে তার তান্ডব লীলা। হাওয়া অফিসের মত, এটি অত্যন্ত বিরল একটি ঘটনা। খুব কম ঘূর্ণিঝড়ই শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে আবার শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়।
আজ আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই এই ঝড়ের প্রভাব লক্ষ্য করা যাবে মহারাষ্ট্র এবং গুজরাতে। আরব সাগরের উত্তর-পূর্ব এবং গুজরাট উপকূলের সংযোগস্থলে উৎপন্ন হয়ে ‘শাহিন’ ক্রমশ পূর্ব থেকে পশ্চিমের দিকে যাবে। এর ফলে বৃহস্পতিবার ব্যাপক বৃষ্টিপাত হবে মহারাষ্ট্র এবং গুজরাতে। শাহিনের প্রভাবে ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার। সেই বৃষ্টির পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি এই ঝড়ের প্রভাব পড়বে ছত্রিশগড় ও তেলেঙ্গানায়। এরপর আগামী ১ অক্টোবর এই ঝড় সরে যাবে ওমানের দিকে।
আবহাওয়া দফতর আধিকারিকদের মতে, এই ধরনের আবহাওয়া পরিস্থিতি খুবই বিরল। ২০১৮ সালের ১০ থেকে ১৯ নভেম্বর এই ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তামিলনাড়ু এবং পদুচেরিতে। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘গাজা’ সেইসময় তামিলনাড়ু এবং পদুচেরিতে আছড়ে পড়ার পর ক্রমশ দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়। কিন্তু তারপরের দিনই পুনরায় সেটি সক্রিয় হয়ে সাইক্লোনে পরিণত হয় দক্ষিণ-পূর্ব আরব সাগরে।
অন্যদিকে, নিম্নচাপের দাপটে প্রবল দুর্যোগের মুখে পড়েছে কলকাতাবাসী। মঙ্গলবার রাত থেকেই কলকাতায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে থাকে। রাত বাড়তে শুরু হয় বৃষ্টির দাপট। বুধবার সারাদিনে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। হাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, বুধবার প্রায় সারাদিন ধরেই কলকাতা ,দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া এবং হুগলিতে বৃষ্টি ব্যাটিং চালাবে। সেইসঙ্গে বইতে পারে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হওয়া। নিম্নচাপের দাপটে বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, নদীয়া এবং পূর্ব বর্ধমানেও। এই নিম্নচাপের কারণে কলকাতায় ইতিমধ্যেই হলুদ সর্তকতা জারি করা হয়েছে। ফাঁকা করা হয়েছে দীঘা, মন্দারমনি এবং তাজপুরের সমুদ্র উপকূল।