নিজস্ব প্রতিনিধি, শাজাপুর: বেগম মুমতাজের স্মরণে তাজমহল তৈরি করেছিলেন শাহজান। সেই পথ ধরেই হাঁটলেন মধ্যপ্রদেশের নারায়ণ সিং রাঠোর। স্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নারায়ণ সিং রাঠোর তৈরি করলেন মন্দির। গল্প হলেও সত্যি।
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটল মধ্যপ্রদেশের শাজাপুর জেলায়।স্ত্রী-পুত্র পরিবার নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল নারায়ণ সিং রাঠোরের। স্ত্রী গীতাবাইয়ের দিন কাটত পুজোর্চনায়। কিন্তু পরিবারে নেমে আসে বিপর্যয়। করোনায় আক্রান্ত হন গীতাবাই। সামান্য আয়ের সংসারে নারায়ণ সিং রাঠোর স্ত্রীকে সুস্থ করে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা চালান। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে চিরকালের জন্য বিদায় নেন গীতাবাই। গত ২৭ এপ্রিল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গীতাবাই। পরিবারে নেমে আসে বিপর্যয়।
নারায়ণ সিং রাঠোর এবং তাঁর একমাত্র ছেলে লাকি সিদ্ধান্ত নেয় গীতাবাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বাড়ির কাছেই একটি মন্দির তৈরি করা হবে। বিগ্রহ হিসেবে সেখানে থাকবে গীতাবাইয়ের মূর্তি। গ্রামের এক শিল্পীকে দিয়ে পরিবার গীতাবাইয়ের একটি মূর্তি তৈরি করে। বাড়ির উঠোনে তৈরি হওয়া মন্দিরে বসানো হয় গীতাবাইয়ের মূর্তি। সকাল হলে নিয়ম করে নারায়ণ সিং রাঠোর এবং তাঁর ছেলে মন্দির পরিষ্কার করেন। মূর্তিকে স্নান করিয়ে শুরু হয় পুজোপাঠ। প্রতিদিন নিয়ম করে মূর্তির পোশাক বদল করা হয়। গ্রামবাসীরা ওই মূর্তিকে দেবীজ্ঞানে পুজো করেন।
ছেলে লাকি জানিয়েছেন, মার দেবভক্তি প্রবল। সংসারের নিত্যদিনের কাজ সামাল দেওয়ার পাশাপাশি পুজোপাঠ নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। তাই, মা মারা যাওয়ার পর বাবা-আমি সিদ্ধান্ত নিই মায়ের স্মৃতিতে বাড়ির কাছেই একটি মন্দির তৈরি করে দেব। যাবতীয় সঞ্চয় ভেঙে আমরা ওই মন্দির তৈরি করি। এলাকার এক শিল্পীকে মায়ের মূর্তি তৈরির জন্য ছবি দেওয়া হয়েছিল। মূর্তি তৈরি করতে সময় লেগেছিল এক মাস। মন্দিরে যেমন রীতি মেনে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করা হয়, রীতি মেনেই এই মন্দিরে মায়ের মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল। এখন সব সময় মনে হয় মা আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন।