নিজস্ব প্রতিনিধি: দীর্ঘ অপেক্ষার পরে এবার ভূস্বর্গ কাশ্মীর পেল তাদের প্রথম মহিলা জিম ট্রেনার। সৌজন্যে আলিয়া ফারুক। কাশ্মীরের অতি সাধারণ ঘরের এই মেয়েই যাবতীয় গতানুগতিকতার উর্দ্ধে গিয়ে কার্যত এক অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন। তাঁর হাত ধরেই জম্মু ও কাশ্মীরের হাজার হাজার মহিলা আজ একটা সুন্দর, সুস্থ জীবনের দিকে অগ্রসর হতে পারছেন। পাশাপাশি ভূস্বর্গের অধিকাংশ মহিলাই জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপে যেভাবে বাধার সম্মুখীন হয় আলিয়া রাতারাতি তাঁদের কাছে হয়ে উঠেছে এক অনুপ্রেরণা।
শ্রীনগরের কন্নরের বাসিন্দা আলিয়া বর্তমানে দুই সন্তানের মা। শারীরিক নানা সমস্যা থাকার কারণে এই আলিয়াই সন্তান জন্ম দেওয়ার সময়ে মরতে মরতে বেঁচেছিলেন। অতিরিক্ত ওজনের জন্য শরীরে বাসা বেঁধেছিল একাধিক রোগ। এরপরেই তিনি তাঁর শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু প্রথমেই যে সমস্যার মুখোমুখি হন তা হল, কাশ্মীরের সমস্ত জিমেই পুরুষ প্রশিক্ষক। এমনকি অধিকাংশ জিমে মহিলাদের প্রবেশও নিষিদ্ধ। তখনই আলিয়া সিদ্ধান্ত নেন তাঁর মতো কাশ্মীরের অন্য কোনও মহিলাকে যাতে এই সমস্যায় না পড়তে হয় তাই তিনি নিজেই জিমের প্রশিক্ষক হওয়ার প্রশিক্ষণ নেবেন।
এই প্রসঙ্গে আলিয়া জানালেন, ‘কাশ্মীরে কোনও জিমেই মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। তাই বাধ্য হয়ে দিল্লিতে গিয়ে আমি জিমে ভর্তি হই এবং প্রায় ২৮ কেজি ওজন কমাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এরপরই আমি জিম প্রশিক্ষক হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। হায়দ্রাবাদ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে ২০১২ সাল থেকেই আমার স্বামীর জিমেই মহিলাদের আলাদা করে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করি।’
আলিয়ার মতে, তাঁর মতো কাশ্মীরের প্রতিটা জেলাতেই মহিলারা এই ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন নিত্যদিনই। তাই তাঁর মতে, কাশ্মীরের প্রতিটি জেলাতেই অন্তত একটি করে জিম থাকা দরকার যেটা মহিলা প্রশিক্ষকদের দ্বারা পরিচালিত হবে।