নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মোদি সরকারকে স্বস্তি দিয়ে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সংবিধান ৩৭০ ধারাকে বাতিলের সিদ্ধান্তই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল, সঞ্জীব খান্না, বিআর গাভাই এবং সূর্য কান্তের সমন্বয়ে গঠিত পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন। প্রত্যাশা মতোই সুপ্রিমের এই রায়কে ‘অসাধারণ সিদ্ধান্ত’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সুপ্রিমের এই রায়দানের পর পিপলস ডেমোক্র্যাটিকর পার্টি নেতা মেহবুবা মুফতির মন্তব্য, “কাশ্মীরের মানুষ হার মানবে না, আশা ছাড়বে না। আমাদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার লড়াই অব্যাহত থাকবে। এখানেই সব শেষ হচ্ছে না। এই সিদ্ধান্ত ভারত ভাবনার পরিপন্থী।” কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ন্যাশানাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা বলেন, “হতাশ হলেও লড়াই চলবে। এই জায়গায় পৌঁছতে বিজেপির কয়েক দশক লেগেছে। দীর্ঘ পথ চলার জন্যও আমরা প্রস্তুত।” শুধু তাই নয় ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ আজাদ পার্টির (ডিপিএপি) সভাপতি এবং জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ বলেছেন, “সুপ্রিম কোর্ট আমাদের শেষ আশা ছিল। আজ তাদের এই রায়ে আমরা হতাশ।”
প্রসঙ্গত, রবিবার রাত থেকেই শ্রীনগর-সহ উপত্যকার বিভিন্ন জায়গায় আঁটসাঁট নিরাপত্তার বন্দোবস্থ করেছে প্রশাসন। রায় নিয়ে সমাজমাধ্যমে বিতর্কিত কোনও পোস্ট করা থেকে রাজ্যবাসীকে বিরত থাকারও পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। উত্তেজনা ছড়াতে পারে এমন কোনও পোস্ট করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পরেই ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ করেছিল মোদি সরকার। আর ওই ধারা রদের পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা বাতিল করে দিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করেছিল।
লাদাখকে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করে। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাতে জন আন্দোলন গড়ে উঠতে না পারে তার জন্য দমনপীড়নের রাস্তায় হেঁটেছিল সরকার। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুখ আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতি-সহ উপত্যকার বিজেপি বিরোধী নেতাদের গ্রেফতার করে গৃহবন্দি করা হয়। কেন্দ্রের ওই ‘স্বৈরাচারী’ পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে একাধিক মামলা দায়ের হয়। যদিও ওই মামলার শুনানি নিয়ে খানিকটা টালবাহানা চলে। শেষ পর্যন্ত সমালোচনার মুখে ৩৭০ ধারা বাতিলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দায়ের মামলার শুনানির জন্য বিশেষ সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।