এই মুহূর্তে




১৩ দিনেই শেষ খুশি, স্বামীর ঘর ছেড়ে পাকিস্তানে ফিরতে হচ্ছে ২ নববধূকে




নিজস্ব প্রতিনিধি, জয়সলমীরঃ অনেকটা স্বপ্ন নিয়ে ভারতে বিয়ে করে এসেছিল দুই পাকিস্তানি কণে। কিন্তু পহেলগাঁও হামলা নিমেষেই তছনছ করে দিল তাঁদের স্বপ্ন। মাত্র ১৩ দিন শ্বশুর বাড়ির ঘর করেই ভারত থেকে পাত্তাড়ি গোটাতে হচ্ছে ওই দুই রমণীর। কেননা ভারত থেকে পাকিস্তানিদের ছাটাই করা হচ্ছে। সেই তালিকাতেই পড়ে গিয়েছেন সদ্য বিবাহিত দুই পাকিস্তানি কণে। ২০২৩ সালে আত্মীয়দের সঙ্গে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের ঘোটকি থেকে ভারতে বেড়াতে এসেছিলেন ২১ বছর বয়সী সচুল এবং ২২ বছর বয়সী কর্মা খাতুন। তখনই তাঁরা রাজস্থানের জয়সালমীরের বাসিন্দা সালেহ মোহাম্মদ এবং মুশতাক আলি নামক দুই যুবকের প্রেমে পড়েন। উভয়পক্ষের পারিবারিক সম্মতির পর ২০২৩ সালের অগস্টে চারজনের বিবাহ হয়। কিন্তু ভারতের ভিসা না পাওয়ায় নববধূদের রেখে ভারতে ফিরে আসেন বরপক্ষ। দেড় বছর অপেক্ষার পর অবশেষে ২০২৫ সালের এপ্রিলে তাঁরা ভিসা পান। এরপর ১১ এপ্রিল রাজস্থানের জয়সলমীরে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছন দুই কনে। শুরু হয় তাঁদের শ্বশুরবাড়ির সংসার। তাতেই বাধ সাধে পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলা।

২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলার পর ভারত সরকার সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিকের ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। এবং সকলকে পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সংসার করার সুখ চিরতরে ঘুচল ওই পাকিস্তানি কনেদের। তাঁদেরকেও পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখনও তাঁদের হাতের মেহেন্দির রং ফিকে হয়নি। ভারতের এই সিদ্ধান্তে কনেরা হতাশ। সচুল এবং কর্মা খাতুন সরকারের কাছে আবেদন করেছেন যে, তাঁরা তাদের পরিবার এবং স্বামীদের ছেড়ে পাকিস্তানে যেতে চান না। কর্মা খাতুনের শ্বশুর হাজি আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, কনেদের ভারতে আসার পরপরই তিনি দীর্ঘমেয়াদী ভিসার (এলটিভি) জন্য আবেদন করেছিলেন, কিন্তু সন্ত্রাসী হামলার পর সরকারের কঠোর নির্দেশের কারণে, প্রশাসন কনেদের পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে স্ত্রীর চলে যাওয়ার খবর শুনে মুশতাক আলির স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেছে, যার কারণে মুশতাককে যোধপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, মানবিক কারণে যেন কনেদের ভারতে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। এদিকে কর্মা খাতুনের অবস্থাও খুবই খারাপ। তার মা ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। বাবাও কর্মসূত্রে আরব থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে কর্মাকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর ভরসা পাচ্ছেন না তাঁরা।

উল্লেখ্য, জম্মু-কাশ্মীরে পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার জেরে স্তম্ভিত গোটা দেশ। সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছেন ২৬ জন পর্যটক। আহত হয়েছেন অনেকে। গত দুই দশকে সবথেকে বড় সন্ত্রাসী হামলা এটি। ইতি মধ্যেই এই হামলার দায়ভার স্বীকার করে নিয়েছেন পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্করের সদস্যরা। অন্যদিকে এই হামলার প্রতিশোধ তুলতে পাকিস্তানের সঙ্গে বহু কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে ভারত। এমনকী ভারতে যে সকল পাকিস্তানি বাস করছে তাঁদেরকেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বের করে দিতে বলা হয়েছে। পাকিস্তানিদেরও ভারতীয় ভিসা বাতিল করে দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভারত সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, পাকিস্তানি নাগরিকদের আজ ২৭ এপ্রিলের মধ্যে আটারি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে ফিরে যাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যার মধ্যে এই দুই বিবাহিত মহিলাও রয়েছেন। তবে পহেলগাঁও হামলা শুধুমাত্র ভারত-পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কই খারাপ করেনি, সাধারণ মানুষের ভাবাবেগেও গভীর প্রভাব ফেলেছে।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

পাকিস্তানি আরও এক দূতকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ

সাইফুল্লাহর শোকসভায় ভারতের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন পাক সেনার

ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে ‘আল্লাহ কে বান্দে …’ গেয়ে হিন্দুত্ববাদীদের হেনস্থার শিকার হিন্দু শিল্পী

রামমন্দিরের নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ জুনের মধ্যে, রাম দরবারের প্রাণ প্রতিষ্ঠা ৫ জুন

চলন্ত ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলা হল স্যুটকেস, ভিতরে মহিলার দেহ, চাঞ্চল্য স্টেশন চত্বরে

পাকিস্তানেই শিকড় জ্যোতিদের, সেই টানেই কী গদ্দারি ইউটিউবারের?

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ