নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: বেয়াদপি কোনও অবস্থাতেই বরদাস্ত করা হবে না বলে দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের আরও একবার সতর্ক করে দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধি। পাঁচ রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে দিলেন হোমওয়ার্ক।
মঙ্গলবার দলের সাধারণ সম্পাদক, রাজ্য সভাপতি এবং অন্যান্য শীর্ষনেতাদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন সোনিয়া গান্ধি। সেই বৈঠকে তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার। তাদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ এবং লাগাতার মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে দলকে একজোট হতে হবে। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে। যুদ্ধজয়ের এটাই একমাত্র রাস্তা।‘
দলের শীর্ষ নেতাদের একাংশের ভূমিকায় তিনি যে অখুশি, সেটাও এদিন কাটা-কাটা কথায় জানিয়ে দিয়েছেন। মঙ্গলবারের বৈঠকে সোনিয়া বলেন, ‘দলের তরফ থেকে প্রায় ফি-দিন বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়, দেশের জ্বলন্ত সমস্যার কথা। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলছে, সেই সমস্যার কথা তৃণমূলস্তরের নেতা-কর্মীদের কানে পৌঁছয় না। শুধু তাই নয়, রাজ্যস্তরে গৃহীত নীতির ক্ষেত্রেও পার্থক্য দেখা গিয়েছে। অর্থাৎ, বিষয় এক হলেও সেই বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে দুই রাজ্যের নেওয়া নীতির মধ্যে তফাৎ ধরা পড়ে। সেই পার্থক্য দূর করতে হবে।‘
এদিনের বৈঠকে সোনিয়া দলের পূর্ব ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, “ ইতিহাস বলছে, অবিচার এবং অসাম্যের বিরুদ্ধে লড়াই, প্রান্তিক মানুষদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার লড়াই শুরু হয় তৃণমূলস্তর থেকে।তাই, তৃণমূলের ভিতকে আরও মজবুত করতে হবে। ”
এদিনের বৈঠক থেকে মোদি সরকারকে নিশানা করে সোনিয়া গান্ধি বলেন, ‘ কেন্দ্রের শাসকদল চাইছে কাঁধ থেকে দায় ঝেড়ে ফেলতে সংবিধানটাই তুলে দিতে চাইছে। শুধু তাই নয়, এই সরকার প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সংবিধানের আদর্শকে খাটো করার। ফলে, দেশে গণতন্ত্র আজ সংকটে। প্রশ্নের মুখে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। তাই, এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে হবে একজোট হয়ে।‘
রাজনৈতিকমহলের একাংশের মতে, নেতাদের একজোট হওয়ার বার্তাই আসলে হোমওয়ার্ক। এর মূল কারণ, সামনেই পাঁচ রাজ্যেই নির্বাচন। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবিতে হাত নিশ্চিহ্ন। পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে যাতে সেই করুণ ছবি দেখতে না হয়, তার জন্য এই আগাম সতর্কবার্তা।