নিজস্ব প্রতিনিধিঃ স্টিয়ারিং হাতে ড্রাইভারের সিটের দায়িত্ব। সঙ্গে রয়েছে পরিবার, সংসার সন্তানের দায়িত্বও। এ এক অন্য নজির। মহিলা বাসচালক প্রতিমা পোদ্দার। স্বামীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংসার আর পেশাদারিত্ব সমান তালে চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু হঠাৎ করে এই পেশাকে বেছে নিলেন কেন প্রতিমা?
প্রতিমা জানালেন, সংসার, সন্তানদের কথা ভেবে উদয়াস্ত পরিশ্রম করেন স্বামী শিব পোদ্দার । এক সময় অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সংসারে দায়িত্ব এসে পড়ে প্রতিমার কাঁধে। সিদ্ধান্ত নিলেন, স্বামীর পাশাপাশি তিনিও সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেবেন। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। স্বামীর কাছে শিখলেন বাস চালানো। তবে সেই পথ খুব সুগম ছিলনা।
স্বামী শিব পোদ্দার জানিয়েছেন হাওড়ার বহু বাস চালক, কন্ডাক্টর এবিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তবে আজ তাঁদের গলায় অন্য সুর। প্রতিমাকে নিয়ে বেশ গর্বিত তাঁরা। স্বামী প্রসঙ্গে প্রতিমা জানান, ‘ওঁর কাছে অনেক কিছু শেখার আছে। প্রতিদিন ওঁর থেকে আমি শিখি। শুধু আমার কথাই নয়। আমাদের দুই মেয়েকে নিয়েও ও যথেষ্ট চিন্তা করে। মেয়েদের লেখাপড়া থেকে খেলাধুলা-সব দিকেই ও খেয়াল রাখে।
শিব পোদ্দার জানান, বিয়ের পর অনেকগুলো দিন আমরা পার করে দিলাম। প্রায় ২৮ বছর। এর মধ্যেই নানা ওঠাপড়া এসেছে। বাড়ির মানুষদের আপত্তি অগ্রাহ্য করে প্রতিমা বাস চালানো শিখেছে। এখন আমার সবাইকে দেখাতে ইচ্ছা করে ও কেমন ভাবে সব দায়িত্ব পালন করে। স্ত্রী-র প্রশংসায় পঞ্চমুখ শিব। বলেন, প্রতিমা সবকিছু আগলে রাখে। ওঁর গলায় কোনও ক্ষোভ বা অভিযোগ নেই। প্রচার মাধ্যমের আলোয় স্ত্রীর আসা, তাঁকে নিয়ে সবার মাতামাতি কোথাও তাঁদের দাম্পত্য জীবনে প্রভাব ফেলেনি। বরং স্ত্রীর এমন প্রচারে গর্ববোধ করেন স্বামী শিব পোদ্দার। শিব-পার্বতী থুরি শিব-প্রতিমার যুগলবন্দীই শহরবাসীকে এমন এক অনন্য নজির উপহার দিয়েছে তা বলাই বাহুল্য।