নিজস্ব প্রতিনিধি: আজকালকার দুর্গাপুজা মানেই ঝাঁ-চকচকে পূজা মন্ডপ এবং তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আধুনিক চিন্তাধারার থিম। এই থিম পুজোর লড়াইয়ে যখন ব্যস্ত থাকেন কলকাতার বড় বড় পুজো উদ্যোক্তারা তখনও কিন্তু সাবেকিয়ানা এবং ঐতিহ্যের রীতিনীতি মেনে বছরের পর বছর ধরে দেবী দুর্গার আরাধনা করে চলেছেন বাগবাজার সর্বজনীনের পুজো উদ্যোক্তারা। বাগবাজার সর্বজনীনের পুজো মানেই বনেদিয়ানা এবং ঐতিহ্য। আর এই দুইয়ের সংমিশ্রণে নির্মিত বাগবাজারের দুর্গা প্রতিমা বছরের পর বছর ধরে মুগ্ধ করে চলেছেন দর্শকদের। কিন্তু সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে ২০২১-এ সময়ের সাথে তাল মিলাতে প্রথা ভাঙছে বাগবাজার সার্বজনীনও। এত বছর ধরে বহন করে চলা রীতিনীতিতে পরিবর্তন এনে বদলে যাচ্ছে বাগবাজারের দুর্গাপ্রতিমা।
সম্প্রতি জানা গিয়েছে, বাগবাজার সর্বজনীন মাতৃ প্রতিমা আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। ২০২০-এর মতো ২০২১-এও করোনা সংক্রমণ রুখতে মণ্ডপে ঝোলানো হবে ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড। আর তার জেরেই বাড়ানো হয়েছে বাগবাজারের মাতৃ প্রতিমার উচ্চতা। দূর থেকে মন্ডপের প্রতিমা পরিদর্শন করতে যাতে দর্শকের কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। বাড়ানো হচ্ছে প্রতিমার মুকুটের উচ্চতাও। জানা যাচ্ছে, এতদিন পর্যন্ত মায়ের মুকুটের উচ্চতা থাকত সাড়ে ৮ থেকে ৯ ফুট। কিন্তু সম্প্রতি সেই উচ্চতা বাড়িয়ে করা হয়েছে সাড়ে ১০ ফুট। একইভাবে মুকুটের উচ্চতা বেড়েছে দেবী লক্ষী এবং স্বরস্বতীরও। এতদিন পর্যন্ত লক্ষী এবং স্বরস্বতীর মুকুটের উচ্চতা থাকত ৬ ফুট। এবার তা বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৭ ফুট।
কিন্তু বাগবাজারের পুজো উদ্যোক্তারা জানালেন একেবারে ভিন্ন কথা। তাঁদের দাবি, প্রতিমার উচ্চতা এবং সাজসজ্জার ব্যাপারে যে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে তা নিতান্তই গুজব। সাবেকিয়ানা যে পূজার মূল আকর্ষণ সেই পুজোর দুর্গাপ্রতিমার ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন আনা সম্ভবই নয়, দাবি উদ্যোক্তাদের। তারা আরও জানালেন মুকুট ছোট, বড় হলেও প্রতিমার উচ্চতার ক্ষেত্রে কোনওদিনই কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবে না। প্রসঙ্গত বলে রাখা দরকার বাগবাজারের প্রতিমার উচ্চতা ২৬ ফুট এবং এই বছরেও সেই একই উচ্চতার প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর সাজসজ্জাতেই কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি বলে দাবি তাঁদের। তবে মন্ডপে ‘নো এন্ট্রি’ থাকার কারণে দূর থেকে যাতে প্রতিমা দর্শনে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য মন্ডপশয্যায় আগের বছরের মতো এবছরও কিছু রদবদল হয়েছে। উঁচু এবং আরও বেশী প্রসস্ত করা হয়েছে মণ্ডপের মুখ্য দুয়ার। দর্শনার্থীদের ভালো-মন্দের কথা বিচার করেই এই সিদ্ধান্ত, দাবি বাগবাজার সর্বজনীনের।