এই মুহূর্তে




দশমীতে কুমারী পুজো দেখতে এসেছিলেন বড়লাট লর্ড কার্জন




নিজস্ব প্রতিনিধি, পূর্ব বর্ধমান: মূলত আগে জমিদাররা দুর্গাপুজো করতেন ধন-সম্পত্তি আরও বৃদ্ধির আশায়। তবে সবক্ষেত্রে তা অবশ্যই প্রযোজ্য নয়। এমন অনেক জমিদার বাড়িতে পুজোর প্রচলন হয়েছে আরও নানা কারণে। কোথাও শত্রুর হাত থেকে জমিদারি রক্ষা করা তো কোথাও প্রজাদের উন্নতিসাধনেও দুর্গাপুজোর প্রচলন হয়েছে। তবে পূর্ব বর্ধমানের কুমারীকোলা গ্রামের বন্দ্যোপ্যাধ্যায় বাড়িতে পুজোর সূচনা হয়েছিল একেবারে অন্য কারণে। অপুত্রক জমিদার প্যারিমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে শুরু করেছিলেন দুর্গাপুজো। তারপর একে একে চার পুত্র ও দুই কন্যাসন্তানের পিতা হয়েছিলেন তিনি।

বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের পুজোর ইতিহাস অনেকটাই ঝাপসা। বাড়ির সদস্যদের থেকে যেটুকু জানা যায়, এই বংশের প্রতিষ্ঠানা নন্দরাম ব্রহ্মচারী। আদি বাড়ি ছিল হুগলির উত্তরপাড়ায়। প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে বর্ধমানের কুমীরকোলা গ্রামে চলে আসেন। তিনিই দামোদারের ধারে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলরাম রেবতী মন্দিরের। তারও অনেক পরে শুরু হয় দুর্গাপুজো। প্রায় দু’শো বছর ধরে দেবী দুর্গার মূর্তি গড়েন পাত্রসায়রের কুম্ভকার। স্থানীয় রূপসা গ্রামের মুখোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরাই বংশানুক্রমে এই পুজোর পৌরহিত্য করে আসছেন। এই পরিবারের গুরুবংশ হল বাঁকুড়ার ইন্দাসের তান্ত্রিক মাধব সিদ্ধান্ত ও গৌরী সিদ্ধান্ত। এখনও এঁরাই পুজো পরিচালনা করেন।

বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের দেবীর কাঠামোয় প্রথম মাটি পড়ে রথের দিন। আর দ্বিতীয় মাটি দেওয়া হয় জন্মাষ্টমীতে। প্রতিমা এক চালার, তপ্তকাঞ্চন বর্ণা। শাড়ি হয় এগারো হাতের। ডাকের সাজে সোনালী জড়ি দিয়ে মাকে সাজানো হয়। দেবী দুর্গার স্বপ্নাদেশ অনুসারে সন্ধি পুজোয় দেবীকে পরানো হয় ১০৮ হাত লম্বা একটি লম্বা রঙ্গন ফুলের মালা। সেই মালা মায়ের গলা থেকে ঘট পর্যন্ত ঝুলে থাকে। এই পুজোর মূল বৈশিষ্ট্য হল, এখানে সিঁদূর খেলা হয় সন্ধি পুজো শেষ হলেই। অন্যদিকে কুমারী পুজো হয় দশমী তিথিতে। কথিত আছে, একবছর সেই কুমারী পুজো দেখতে বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে এসেছিলেন তদানীন্তন বাংলার বড় লাট লর্ড কার্জন। আগে বলি হত। কিন্তু দেবীর নির্দেশে বলি বন্ধ করা হয়।

সর্ব-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেরই অবাধ প্রবেশাধিকার রয়েছে বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুজোতে। কথিত আছে প্রথম জীবনে দরিদ্র প্যারিমোহন এক মৌলবীর সাহায্যে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। তাই তাঁর কাছে কোনও মানুষের ভেদাভেদ ছিল না। আজও সেই ঐতিহ্য বহন করে চলেছে কুমীরকোলা গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায়দের দুর্গাপুজো। আদিবাসী, দলিত এবং নিম্ন সম্প্রদায়ের মানুষজনের পাশাপাশি মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষজনও পুজো দেখতে বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে ভিড় করেন আজও।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

৩০০ বছর ধরে সিংহবাহিনী দেবী রূপে পুজিতা হয়ে আসছেন এই রাজবাড়িতে

দশভুজা রূপে নন, দেবী এখানে পুজিতা হন ‘দুই’ হাতেই

বেলগাছকে দুর্গা রূপে পুজো, আজও বলির নিয়ম চলে আসছে শীল বাড়িতে

মায়ের স্বপ্নাদেশে শুরু পুজো! দেবীর আট হাত ঢেকে রাখা হয় এই বনেদি বাড়ির পুজোয়

ঘটি-বাঙালের মিশ্রণ, এই বনেদি পুজোয় বাড়ির পান্তা খেয়ে বিসর্জনের রীতি আজও রয়েছে

বারাসতের দক্ষিণপাড়ায় ৪৫৪ বছরের শিবের কোঠার দুর্গাপুজো সংকল্পিত হয় যোধাবাঈয়ের নামে

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর