এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

WEB Ad_Valentine



মহিষাসুরমর্দিনী নন, লাহাবাড়িতে পুজো হয় মা জগজ্জননী



নিজস্ব প্রতিনিধি: হাতে থাকে না অস্ত্র। থাকে না মহিষাসুরও। দেবী দুর্গার অবস্থান শিবের কোলে। ঠনঠনিয়া লাহা বাড়িতে পুজো হয় না মহিষাসুরমর্দিনী বরং, এখানে দেবী দুর্গা পূজিত হন জগজ্জননী হিসাবে। মাটির প্রতিমা তৈরি করা হলেও, তা আসলে প্রতীকী। বাড়ির কুলদেবী অষ্টধাতুর সিংহবাহিনীর সামনেই পুজোর ঘট বসানো হয়। এবছর ২২৭ বছরে পা দিল লাহা বাড়ির দুর্গাপুজো। এই পুজোর আরও অনেক বিশেষ বৈশিষ্ট রয়েছে। তবে পুজো শুরুর ইতিহাসটা কিছুটা ঝাপসা।

আগে কলকাতার বনেদি পরিবারগুলিতে দুর্গা প্রতিমা বাড়িতেই তৈরি হত। তবে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখন আর তা চোখে পড়ে না। কিন্তু লাহা বাড়িতে এখনও কুমোর এসে তৈরি করে প্রতিমা। একচালের প্রতিমার সামনে বসানো হয় অষ্টধাতুর সিংহবাহিনী। কথিত আছে, অষ্টধাতুর সেই মূর্তিকে জঙ্গলে ফেলে রেখে গিয়েছিল ডাকাত দল। দীর্ঘদিন জঙ্গলেই পড়ে ছিল। একসময় ওই পরিবারের কর্ত্রী নবকৃষ্ণ লাহার স্ত্রী স্বপ্নাদেশ পান। এরপর দেবীর নির্দেশমতো তাঁকে জঙ্গল থেকে এনে লাহা বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করা হয়। তারপর থেকেই নাকি পরিবারের ধন-সম্পত্তির শ্রীবৃদ্ধি হতে থাকে। তবে দুর্গাপুজোর সূচনা ঠিক কে করেছিলেন, তা নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে অনেক। অনেকে বলেন, নবকৃষ্ণ লাহা কিংবা দুর্গাচরণ লাহা এই পুজোর প্রবর্তক। যদিও পরিবারেরই অনেক সদস্যদের দাবি, দুর্গাচরণের অন্তত তিন পুরুষ আগে লাহাবাড়িতে শুরু হয় দুর্গোৎসব। কেউ বলেন রাজীবলোচন লাহা, আবার কারও মতে তস্য পুত্র প্রাণকৃষ্ণ লাহা পত্তন করেছিলেন দুর্গাপুজোর।

আজও একাধিক শরিকে বিভক্ত লাহা পরিবারের পুজো। প্রতিবছর পালা করে পুজোর দায়িত্ব নেয় বড়, মেজ ও ছোট শরিক।  বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী এই পরিবার মহিষাসুর বধকে হিংস্র মনে করেন। তাই পরিবারে মা দুর্গা দশভুজা হয়ে আসেন না। তিনি আসেন হরগৌরী রূপে। দুর্গা বসেন স্বামী শিবের কোলে। শিবের বাহু বেষ্টন করে থাকে তাঁকে। দুর্গার দু’চোখ বন্ধ। পুজোর রীতি-রেওয়াজেও রয়েছে অনেক বৈচিত্র। ষষ্ঠীতে বোধনের সময় পরিবারের কুলদেবী সিংহবাহিনীকে রুপোর সিংহাসনে বসিয়ে পুজো করা হয়। বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী হওয়ায় কোনওরকম পশু বলি হয় না। ছাঁচিকুমড়ো ও শশা বলি হয়। লাহাবাড়িতে সন্ধিপুজোর সময় মহিলারা দু-হাতে ও মাথায় মাটির সরার মধ্যে ধুনো পোড়ান। ভোগ নিবেদনেও রয়েছে বৈচিত্র। অন্নভোগ দেওয়া হয় না। ভোগে থাকে শুধুই মিষ্টান্ন। আগে বাড়িতেই ভিয়েন বসিয়ে বানানো হত মিষ্টি। এখন অবশ্য আর তা হয় না। তবে দোকান থেকেই ২১ রকমের মিষ্টি কিনে নিয়ে এসে ভোগ নিবেদন করা হয়।

শুধু পুজোতেই নয়, বিসর্জনেও রয়েছে বৈচিত্র। পরিবারের মতে, কাঁধে করে শবদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। আর তাই দড়ি দিয়ে মাটির প্রতিমা বেঁধে ঝুলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় গঙ্গার ঘাটে। তার আগে সিংহবাহিনীর মূর্তিকে বাড়ির ঠাকুর ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ বাড়ি থেকে দুর্গা প্রতিমা বেরিয়ে যাওয়ার পরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় সদর দরজা।  বিসর্জন দিয়ে কাঠামো না ফেরা পর্যন্ত বাড়ির দরজা বন্ধই থাকে৷ এর নেপথ্যেও রয়েছে বিশেষ কারণ। কথিত আছে, একবছর বিসর্জনের সময় বাড়িতে তাড়াতাড়ি ফিরে স্নান করছিলেন বাড়ির কর্তা দুর্গাচরণ লাহা। সেই সময় এক বালিকা এসে ভিক্ষা চায়। বিরক্ত হয়ে তাকে তাড়িয়ে দিলেও পরে উপলব্ধি করেন, স্বয়ং মা দুর্গাই বালিকার বেশে এসেছিলেন। এমন ভুল যাতে আর না ঘটে সেই জন্যই বিসর্জন পর্যন্ত বাড়ির সমস্ত দরজা-জানলা বন্ধ রাখা হয়। কাঠামো নিয়ে ফেরার পর বাইরে থেকে তিনবার ডাকতে হয়, তারপরই দরজা খোলা হয়।



Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

আজ গান্ধিজির জন্মজয়ন্তী, চলছে দুর্গাপুজোও, নাড়াজোল রাজবাড়ি এবং বাপুজীর সম্পর্ক

সম্রাট হুমায়ুনের আমল থেকে এই বনেদি পুজোর সূত্রপাত, জানুন ব্যারাকপুরের ৪৯২ বছরের দাশগুপ্ত বাড়ির পুজোর ইতিহাস……

রানি রাসমণির দুর্গাপুজো, এখানে রামকৃষ্ণ নিয়েছিলেন রমণী বেশ

এই বনেদি বাড়িতে দেবী দুর্গা পূজিতা হন বছরে দু বার

বনেদি বাড়ির পুজো না বারোয়ারি পুজো, আপনার কোনটা বেশি পছন্দের?

এখানে মুসলিম পরিবারই প্রথমে ভোগ নিবেদন করেন দেবী দুর্গাকে

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর