নিজস্ব প্রতিনিধি: উৎসব উদযাপন আড়ম্বরে নয়, বরং সামাজিকতায়। সেই কথাই যেন ছত্রে ছত্রে মনে করিয়ে দেয় খিদিরপুর যুবগোষ্ঠী। এবার ৬০ বছরে পা দিল এই পুজো। তবে শুধু দুর্গাপুজোর মধ্যে আবদ্ধ না থেকে সারাবছর ধরেই বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিজেদের নিযুক্ত রাখেন পুজো কমিটির সদস্যরা। বিশেষ করে গত দু’বছরে সবচেয়ে খারাপ সময় গ্রাস করেছে বাংলাকে। একে তো করোনা, তার ওপর একের পর এক ঘূর্ণিঝড়। মানুষের দুর্দশার দিনে সর্বদা পাশে থেকেছে খিদিরপুরের যুবদের গোষ্ঠী।
পথচলা শুরু ১৯৬২ সালে। বিগত বছরগুলিতে দেবী দুর্গা কখনও তুষের, কখনও বাটিকের রঙে, আবার কখনও নবদুর্গা রূপে যুবগোষ্ঠীর মণ্ডপে পুজিত হয়েছেন। থিমের পুজো অবশ্য কোনওবারই হয়নি, তবে ছিল অভিনবত্ব, জৌলুস, আলোর রোশনাই। তবে গতবছর থেকে পুজোর বাজেট কমিয়ে ওই টাকা সমাজ ও মানবকল্যাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পুরদমে। যখন কোভিড আক্রান্তদের নিয়ে সাধারণ মানুষের নাক সিঁটকানো ছিল, তখন এই পুজো কমিটির সদস্যরা আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস, ওষুধ, এমনকী অক্সিজেন সিলিন্ডার পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। এরপরেই ঘূর্ণিঝড় যশে বিধ্বস্ত্ব হয়ে পড়ে উপকূলীয়বর্তী এলাকা। সেইসময়ও শুকনো খাবার, ওষুধ, পানীয়জল, শিশুদের জন্য দুধ ও পোশাক পৌঁছে দিয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার চারালখালি ব্লকের দু’টি গ্রামে।
এখানেই শেষ নয়, পুজো কমিটির সম্পাদক সোমনাথ গায়েন জানান, মালঞ্চ সংলগ্ন একটি বৃদ্ধাশ্রমে মাসে একবার করে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। এবছর ওই বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের হাত ধরেই পুজোর সূচনা করতে চলেছে খিদিরপুর যুবগোষ্ঠী। কোনওরকম থিম না হলেও এবারের পুজোর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘দেখবে ঠাকুর তুমিও’। প্রতিমাও প্রতিবছরের মতো সাবেকি। এই পুজোর মূল আকর্ষণ প্রতিমাই। সেকারণেই নানা পুরস্কার এসেছে ক্লাবে। বেশি জাঁকজমকপূর্ণ পুজো না হলেও থাকে আনন্দ, সর্বোপরি আন্তরিকতা। আর সেটাই পাথেয় করে এগিয়ে চলেছে খিদিরপুর যুবগোষ্ঠী।