32ºc, Haze
Sunday, 2nd April, 2023 5:55 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: দুর্গা পুজো আর পদ্ম, এই দুটো জিনিসই এক অর্থে একে অপরের পরিপূরক। পদ্মফুল ছাড়া দুর্গাপুজোর কথা ভাবাই যায় না। শাস্ত্র মতে ১০৮ পদ্ম ছাড়া দুর্গাপূজার সন্ধি পুজো কখনও সম্পন্নই হয় না। আর তাই শরতের শুরু থেকেই পদ্ম চাষিদের নিঃশ্বাস ফেলার সময় থাকে না। যদিও তাঁদের প্রস্তুতি বাংলা ক্যালেন্ডারের একেবারে প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়ে যায়। অর্থাৎ চৈত্র শেষে বিশাখের শুরু থেকেই শুরু হয় বীজ রোপণ। কিন্তু গত বছর থেকে পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টেছে। লকডাউনে বন্ধ ট্রেন চলাচল। সেইসঙ্গে করোনার পরিস্থিতির কারণে দুর্গাপূজার সংখ্যাও আগের তুলনায় অনেক কমেছে। আর তার সরাসরি প্রভাব পড়ছে পদ্ম চাষে।
পূর্ব মেদিনীপুরের পদ্ম চাষিরা জানালেন, গত বছর থেকে একটানা লকডাউন চলায় পদ্ম কেনাবেচা ভয়ঙ্কর রকমভাবে কমে গিয়েছে।পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় ইয়াশের ফলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর এই সবকিছুর জেরে পদ্ম ব্যবসা একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এই বছরও যদিও পদ্ম চাষীরা চাষের কাজ বজায় রেখেছেন, কিন্তু বিক্রিবাটা যে আগের মত হবে না সেটা তারা এখন থেকেই বুঝতে পারছেন।
তাঁরা আরও জানালেন, শুধুমাত্র দুর্গাপূজার মরশুমেই পদ্ম বিক্রি করে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ হত তাঁদের। কিন্তু গত বছর থেকে তার অর্ধেকও হচ্ছে না। ব্যাংক থেকে লোন মিলছে না। তাই গ্রামাঞ্চল থেকে চড়া সুদে টাকা তুলে তবে চাষের কাজ এগোচ্ছে। কিন্তু আগের বছরের মতো এ বছরও এই লকডাউন পরিস্থিতিতে সেরকম ফুল বিক্রি হবে না তা স্পষ্ট বুঝতে পারছেন চাষিরা। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কলকাতার বাজারে ফুল পৌঁছচ্ছে না। সবে মিলে আগের মত দুর্গাপূজোয় আর হাসি ফুটছে না পদ্ম চাষীদের মুখে।
অন্যদিকে, এই সমস্ত জায়গা থেকে পদ্মফুল যদি কলকাতার বাজারে এসে না পৌঁছায় তাহলে কলকাতার ফুলের বাজারে যে পদ্মের চরম অভাব দেখা দেবে দুর্গাপূজার সময় তা কার্যত স্পষ্ট। পুজোর মরসুমে অন্যান্য বছর যেখানে পাঁচ টাকা দশ টাকা দরে পদ্মফুল পাওয়া যায় সেখানে আগের বছর এক একটা পদ্ম বিক্রি হয়েছে পনেরো থেকে কুড়ি টাকা পর্যন্ত দরে। সব মিলিয়ে পদ্ম কেনাবেচাতেও যে থাবা বসিয়েছে করোনা তা কার্যত স্পষ্ট।