বন্ধন রাহাকে মনে আছে?
খুবই কঠিন প্রশ্ন হয়ে গেল। কে বন্ধন রাহা? এই উৎসবের মরসুমে এতো কিছু পড়ে থাকতে শেষে কি না বন্ধন রাহা।
আচ্ছা, বোসপুকুরেরর সেই ভাড়ের প্যান্ডেলের কথা মনে আছে? যে পুজো প্যান্ডেল দেখতে গোটা সে বছর শহর তো বটেই, শহরতলী ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সব আলো শুষে নিয়েছিল কলকাতার একটাই পুজো। বারোয়ারি পুজোয় ঘটে গিয়েছিল নিঃশব্দ বিপ্লব। দশমী পার করে একাদশী, দ্বাদশী- লোকের বল্গাহীন স্রোত। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনকে মাঠে নামতে হয়েছিল।
এবার থেকে ভিক্ষা করলেই হতে পারে এক বছরের জেল ও ১ লাখ জরিমানা
একটি পুজোমণ্ডপ ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিল বারোয়ারি পুজোর প্রচলিত ধ্যান-ধারণা। জন্ম নিয়েছিল এক নতুন শব্দবন্ধনী- থিম পুজো। সে বছর উত্তর-বনাম দক্ষিণের চিরাচরিত ঠাণ্ডা লড়াইয়ে কিস্তিমাত করেছিল বোসপুকুর সর্বজনীন।থুড়ি ভাড়ের প্যান্ডেল।
নাতনির আবদারে কাপড়-সুতো দিয়েই দুর্গা তৈরি করলেন ঠাকুমা
শুধু কি বোসপুকুর সর্বজনীন? বন্ধন রাহার হাতের জাদুতে বরিষা সর্বজনীন সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছিল। থিম ছিল শূন্য থেকে শুরু। দমদম পার্ক যুবকবৃন্দ। তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর। আচমকাই সব কিছু স্তব্ধ।
আশাকরি পাঠক এবার স্মরণ করতে পারছেন কে বন্ধন রাহা?
এক বাক্যে বন্ধন রাহার পরিচয় বারোয়ারি পুজোর চিরাচরিত মিথ ভেঙে দেওয়ার কারিগর। আজ সেই বন্ধন রাহা যাববতীয় বন্ধন ছিন্ন করে একাচারী। বলা যেতে পারে, একপ্রকার ‘সঙ্গী জনবিহীন শূন্য ভবনে’ দিন যাপন করছেন কলকাতার থিমপুজোর উদগাতা। গুরুতর অসুস্থ। সঙ্গী নানা সমস্যা। একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন তাঁর মনের কথা।
বিবাহিত পুরুষদের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখেন এই মহিলা
ভাঁড়ের পুজো বন্ধন রাহাকে শহরবাসীর সঙ্গে পরিচয় ঘটালেও শিল্পীর কথায়, থিমপুজোর ভাবনা তার অনেক আগে। এর জন্য পাকা চাকরির মায়া ত্যাগ করেছিলেন। কাজ করতেন একটি অ্যাড এজেন্সিতে। কিন্তু মাথায় চাপল অন্য ভাবনা। থিমপুজো।
আফ্রিকায় এই জনজাতির সমাজে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ‘যৌনতা’
বন্ধন রাহা জানান, “কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে সুনীল নগর পুজো কমিটির পুজো দিয়ে শুরু থিমপুজোর ভাবনা। তারপর বোসপুকুর সর্বজনীন পুজো কমিটির আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে।” বলা যেতে পারে একপ্রকার হাইজ্যাক করে তারা নিয়ে গিয়েছিল এই জাদুকরকে। শহর কলকাতা দেখল এক আশ্চর্য আবিষ্কার। ভাড়ের প্যান্ডেল। আত্মপ্রকাশেই বাজিমাত। প্রচারমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসে বোসপুকুর সর্বজনীন, সেই সঙ্গে বন্ধন রাহা। পরের বছর আবার চমক। এবার আখের ছিবড়ে দিয়ে পুজো প্যান্ডেল এবং যথারীতি সেই বোসপুকুর সর্বজনীন।
বড় দুর্গার কারিগর, বায়না সীমিত এবছর
কিন্তু কয়েক বছর ধরে সব কিছু থমকে গিয়েছে। কিন্তু কেন?
একান্ত সাক্ষাৎকারে কলকাতার থিম পুজোর সৃষ্টিকর্তা জানান, “২০১৯ সালে কামারহাটিতে একটি কাজ করতে করতে মাঝপথে সেই কাজ ছাড়তে হয়েছিল। বর্তমানে শরীর খুব ভালো নয়। একান্ত ব্যক্তিগত কারণে নিজেকে আপাতত গুটিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাছাড়া করোনার কারণে গত বছরেও পুজোর জৌলুসে ভাঁটা পড়েছে। এবছরেও তেমন জাঁকজমক করে পুজো হবে না। বড়ো বড়ো পুজো কমিটি, যাদের অর্থের দিক থেকে একটু ভালো অবস্থানে রয়েছে, তারা হয়তো এবার ঘটা করে পুজো করতে পারে। কিন্তু কলকাতার পুজো এ বছরেও তেমন জাঁকজমক করে হবে না। কারণ করোনা। তাছাড়া শরীর আমার খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ। তবে আগের মতো মানসিক জোর নেই। মা যদি চান তাহলে আগামী বছর আবার নতুন করে শুরু করব।”
বন্ধন রাহার হাতের কেরামতি দেখার অপেক্ষায় রইল শহরবাসী।