নিজস্ব প্রতিনিধি, বালুরঘাট: করোনাকালে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে মন ভাল ছিল না বালুরঘাটের আনন্দবাগান পাড়ার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শুভায়ু বর্মণ ও তার বোনের। একদিকে যেমন স্কুল বন্ধ, অন্যদিকে বিকেলে আর কেউই খেলতে বেরোয় না। সামনেই পুজো, কিন্তু করোনার কারণে হয়তো এবারেও মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে ঠাকুর দেখা হবে না। কিন্তু উপায় কী! বাড়িতে একঘেয়ে হয়ে উঠে একসময় বোনই তা বাতলে দিয়েছিল। একটা দুর্গাঠাকুর বাড়িতেই বানানোর আবদার করেছিল দাদার কাছে। আর যেমন কথা, তেমন কাজ।
বালুরঘাটের আনন্দবাগান পাড়ার বাসিন্দা পেশায় রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল স্বপন বর্মণের ছেলে শুভায়ু। অনেক ছোট থেকেই মাটি নিয়ে বিভিন্ন মূর্তি তৈরি করা সখ তার। ঠাকুমা খুকু বর্মণ জানান, একবার গণেশের মূর্তি গড়ে পাড়া-প্রতিবেশিদের তাক লাগিয়ে দিয়েছিল সে। এবার যখন করোনা আবহে বাইরে গিয়ে অন্যদের সঙ্গে খেলাধূলা বন্ধ, তখন ছোট বোনের আবদার মেটাতে শুরু করে দেয় দুর্গা মূর্তি তৈরির কাজ। শুধু দুর্গা নয়, একচালা কাঠামোতে লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী ও কার্তিকও গড়ে তুলেছে শুভায়ু। রঙের প্রলেপও পড়ে গিয়েছে। বাকি শুধু চক্ষুদান।
বাঁশ নয়, কঞ্চি দিয়েই তৈরি করেছে কাঠামো। খড়ের পাশাপাশি অব্যবহৃত ইলেকট্রিক তার ব্যবহার করেছে সে। তার ওপর মাটির প্রলেপ। মাত্র ১৫ দিনেই এই কাজটা সম্পন্ন করে ফেলেছে বলে জানায় শুভায়ু। তার কথায়, ‘বাইরে গিয়ে খেলা বন্ধ। তাই আমি আর বোন মিলে খেলার ছলেই বাড়ি বসে এই দুর্গাপ্রতিমাটি বানাচ্ছি।’ বাড়িতে যখন দুর্গা এসেই গিয়েছে, তখন খুব ছোট করে হলেও পুজোর আয়োজন করতে চায় ঠাকুমা খুকু বর্মণ। তিনি জানালেন, ‘দুর্গাপুজোর সমস্ত নিয়ম মেনেই পুজো হবে বাড়িতে। এখন আর বাইরে যেতে না পারার জন্য মন খারাপ করবে না। বরং বাড়িতেই পুজোর চারটি দিন আনন্দে মেতে উঠব।’