নিজস্ব প্রতিনিধি: একটা স্বপ্নের যাত্রা দেখেছিলেন পদ্ম শিবিরের নেতা থেকে কর্মী মায় সমর্থকেরা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ১৮ আসন প্রাপ্তির মধ্যে দিয়ে যে স্বপ্ন উড়ান ডানা মেলেছিল তা মুখ থুবড়ে পড়ে মাত্র ২ বছরের মধ্যে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে। ‘আব কে বার ২০০ পার’ শ্লোগান তুলেও ১০০ আসনেও জয়লাভ করেনি পদ্ম শিবির। আর তাতেই ঘটেছে স্বপ্নভঙ্গ। আকাশ ছুঁতে চাওয়া উড়ান মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে। আর তাতেই ভেঙে চৌচির দলের সর্বস্তরের সংগঠন। ভেঙে চুরমার সব স্বপ্ন। আর তার জেরে প্রতি নিয়ত পিছু হঠার পালা। ধরে রাখা জমি পায়ের নীচ থেকে ক্রমশ সরে যাওয়ার পালা। তবুও কলকাতার ভোট লড়াইয়ে সামিল হয়েছে পদ্মশিবির, থুড়ি বিজেপি। এখন দলের সেই মুখ থুবড়ে পড়া সংগঠন নিয়েই নতুন করে স্বপ্ন বুনছে বিজেপি। যদি কলকাতার পুরনির্বাচনে ভদ্রস্থ কোনও ফল করে দেখানো যায়।
শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তিনি দলের সামনে মাত্র ১০টি আসনে জেতার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে দিয়েছেন। যাতে কলকাতা পুরনিগমে এবারে যেন বিজেপি এক অঙ্কের বদলে অন্তত দুই অঙ্কের আসন পায়। কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রা কী আদৌ পূরণ হবে? এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। কেননা বিধানসভা নির্বাচনের পরে হয়ে যাওয়া ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফলই বলে দিচ্ছে বাংলার মানুষ বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়েছে। সেই নেতিবাচক মনোভাব ছাপ ফেলেছে এবারে বিজেপির প্রচারেও। কার্যত শহরের অর্ধেক ওয়ার্ডে তাঁরা প্রচারেই নামতে পারেনি। দুর্বল আর ভঙ্গুর সংগঠনের জন্যই যে সেই দশা সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও বিজেপির নেতারা নিজেদের মুখরক্ষার জন্য দলের গাফিলতি আর দুর্বলতার কথা স্বীকার না করে শাসকের সন্ত্রাসকে তুলে ধরছে। যদিও বাম আর কংগ্রেস প্রার্থীদের নির্বিঘ্নের প্রচার সেই দাবিকেও প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।
২০১৫ সালে কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচনে বিজেপি ৭টি ওয়ার্ডে জয়ের মুখ দেখেছিল। কিন্তু এবারে সেই ৭টি আসনও তাঁরা ধরে রাখতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বিজেপির অন্দরেই। যদিও বেশ কিছু সমীক্ষা বলছে, বিজেপি এবারে ১০ থেকে ১৫টি ওয়ার্ডে জেতার মতো অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে উত্তর ও মধ্য কলকাতায়। কিন্তু সেখানেও খটকা থাকছে। কেননা যে অবাঙালি হিন্দিভাষী ভোটাররা বিজেপির মূল ভোট ব্যাঙ্ক হিসাবে পরিচিত তাঁরাও একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকেই বেছে নিয়েছে ভোট দেওয়ার জন্য। সেই স্রোত যদি এবারের পুরনির্বাচনেও বজায় থাকে তাহলে কিন্তু বিজেপির গতবারের জেতা আসনও হাতছাড়া হতে পারে গেরুয়া শিবিরের। কার্যত তা কমে অর্ধেকও হয়ে যাতে পারে। সেক্ষেত্রে বিজেপি হয়তো ২ থেকে ৩টি ওয়ার্ডে জয়ের মুখ দেখবে। আর এখানেই আরও একবার বিজেপির স্বপ্নভঙ্গের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।