এই মুহূর্তে

বিধানসভা থেকে বিলুপ্ত, পুরনির্বাচনে ব্যক্তিগত ইমেজই ভরসা

কৌশিক দে সরকার: দেশের জাতীয় দল। দশকের পর দশক ধরে তাঁরা দেশ শাসন করেছে। শাসন করেছে বাংলাও। যদিও ক্ষমতা হারাতে হয়েছে বামেদের কাছে। কিন্তু সেই অর্থে কোনওদিনই তাঁরা বাংলা থেকে বাম অপশাসনের অবসান ঘটানোর কোনও চেষ্টাই করেনি। বরঞ্চ তলে তলে বামেদের সঙ্গে বোঝাপড়াই বজায় রেখেছিল তাঁরা। দিল্লিতে দোস্তি আর বাংলায় কুস্তি। কিন্তু বাংলার মানুষকে লালসন্ত্রাসে অত্যাচারিত হতে দেখে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলের জন্ম দেন বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই নতুন দল গঠনের ১৩ বছরের মধ্যেই বাংলার ক্ষমতায় জোড়াফুল। কার্যত মমতার তৃণমূল কংগ্রেস গঠনের সময় থেকেই বাংলার বুকে সাইনবোর্ড সর্বস্ব দলে পরিণত হয়েছিল জাতীয় কংগ্রেস। সেই ক্ষয় কোনও ভাবেই রুখতে পারেননি প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা। মাঝে ২০১৬ সালে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে আসা। কিন্তু বিজেপির উত্থান সেই ছবিটাও কেড়ে নিয়েছে। নিট রেজাল্ট একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার বিধানসভা থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া।

আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের শতাধিক পুরসভায় রয়েছে নির্বাচন। সেই নির্বাচনে কংগ্রেস কোথাও একা লড়ছে কোথাও বা বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছে। কিন্তু রেজাল্ট কী আসবে, সেটা কংগ্রেসের অতিবড় সমর্থকও জোর গলায় বলতে পারবেন না। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের মতোই বামেরাও বিধানসভা থেকে ধুয়ে মুছে গিয়েছে। কিন্তু তাই বলে তাঁরা হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি। রাস্তায় নেমে ছোটবড় নানা ইস্যুতে আন্দোলন করে চলেছে। নিট রেজাল্ট আবারও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তাঁরা। বাড়ছে ভোট প্রাপ্তির হার। যে ভোট চলে গিয়েছিল রানের ঝুলিতে তা আবারও ফিরছে বামের ঘরে। কিন্তু কংগ্রেস, আন্দোলনহীন এসে ঘরে বসে ডায়লগ আউড়ে যাওয়া নেতাদের চারপাশেই সীমাবদ্ধ। কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচন হোক বা হালে হয়ে যাওয়া আরও ৪টি পুরনিগমের ফল হোক, সবেতেই কংগ্রেসের মুখ থুবড়ে পড়া। কলকাতায় প্রাপ্তি মাত্র ১টি আসন। শিলিগুড়িতেও ১টি আসন। আসানসোলে ৩টি। বিধাননগর আর চন্দননগরে ঝুলি শূণ্য। মানে ৫ পুরনিগমে কংগ্রেসের যে পাঁচ প্রার্থী জিতেছেন তাঁরা কেউই দলের গ্রহণযোগ্যতা বা জনপ্রিয়তায় জেতেননি। জিতেছেন নিজেদের ভাবমূর্তির জোরে। এবারেও যে শতাধিক পুরসভায় ভোট হতে চলেছে সেখানেও যদি দেখা যায় কিছু কিছু জায়গায় কংগ্রেস খাতা খুলেছে তখন ধরে নিতেই হবে তা প্রার্থীদের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তির জয়, প্রদেশ কংগ্রেসের কখনই নয়।

বাম জমানা তো বটেই তৃণমূলের জমানাতেও মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরের মতো সংখ্যালঘু জেলাগুলির পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় পকেট ভোটের অধিকারী ছিল কংগ্রেস। কিন্তু বিজেপির উত্থান সব হিসাব বদলে দিয়েছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনেই দেখা গিয়েছে এককালের কংগ্রেসের জেলা থেকে শুরু করে সংখ্যালঘু ভোট, পকেট ভোট সবই গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। কার্যত এই ফলই বলে দিচ্ছে এ রাজ্যের সংখ্যালঘু ও বিজেপি বিরোধীদের মনে হয়েছে কংগ্রেস নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসই পারে বিজেপিকে রুখে দিতে। তাই তাঁরা কার্যত দুই হাত উপুড় করে ভোট দিয়েছে তৃণমূলকে। আর কী দেখেই বা তাঁরা ভোট দেবেন কংগ্রেসকে। জাতীয় রাজনীতিতে এই দলটি এখন ক্রমশ জমি ছেড়ে দিচ্ছে বিজেপিকে। আর এই রাজ্যে তৃণমূল বিরোধীতাকে এত উচ্চগ্রামে নিয়ে যাচ্ছে যে বোঝা মুশকিল তাঁরা কংগ্রেসের হয়ে লড়াই করছেন নাকি বিজেপি তাঁবেদারি করছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এই শতাধিক পুরসভার নির্বাচনেও কংগ্রেসকে ঘিরে না কেউ কিছু ভাবছে না কিছু করছে। এমনকি বামেরাও যতটা সম্ভব পারছে এড়িয়ে যাচ্ছে তাঁদের।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

শেখ শাহজনের জামিনের আবেদন খারিজ

রাজ্যের জন্য বিশেষ অবজারভার দিল্লির কমিশন পাঠাচ্ছে : অরিন্দম নিয়োগী

চাই পুরসভা, চাই পূর্ণাঙ্গ থানা, গলা তুলছে আমোদপুর

নির্বাচন কমিশনকে ‘মেসো’ বলে কটাক্ষ দিলীপের

দইয়ের পর এবার হুগলীর ঘুগনিতে মুগ্ধ রচনা, খেলেন আবার খাওয়ালেনও

‘ভগবানের’ প্রার্থীপদ খারিজের দাবি তৃণমূলের, নেপথ্যে মৃত্যু কামনা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর