এই মুহূর্তে

সন্মুখ সমরে সিপিএম-সিপিআই! প্রশ্নের মুখে বাম ঐক্য

নিজস্ব প্রতিনিধি: ৩৪ বছর তাঁরা যৌথগত ভাবে বাংলা শাসন করেছেন। তবে যত না শরিক দল হিসাবে শাসন করেছেন তার থেকে ঢের বেশি নিজেরা সাইনবোর্ড সর্বস্ব দলে পরিণত হয়েছেন বড় শরিকের তাঁবেদারি করতে গিয়ে। এবার তাঁরাই বিধাননগরে নেমেছেন সন্মুখ সমরে। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁদের লড়াই শুধু শ্লোগান যুদ্ধে থেমে থাকেনি, এখন শুরু হয়ে গিয়েছে ফ্লেক্স ব্যানার ছেঁড়াছেঁড়ি। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে রাজ্যের বাম ঐক্যের ছবি। কেননা দুই দলই বামফ্রন্টের শরিক দল। প্রথমজন বড় শরিক সিপিআই(এম) আর দ্বিতীয়জন ছোট শরিক সিপিআই।

রাজ্যে যখন বামফ্রন্ট তৈরি হয়েছিল তখন অবিভক্ত মেদিনীপুর, ২৪ পরগনা, নদিয়া, বর্ধমান, পশ্চিম দিনাজপুরের মতো জেলাগুলিতে সিপিআই-য়ের খুব ভালো সংগঠন ছিল। সেই সূত্রে আমজনতার মধ্যে তাঁদের ভোটারের সংখ্যাও ছিল বেশ ভারী। কিন্তু বাম জমানার ৩৪ বছরে সেই প্রভাব কার্যত ভেঙে গুঁড়িয়ে চূর্ণ হয়ে হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছে। এর নেপথ্য কারন হিসাবে রয়েছে সিপিআই(এম)-এর প্রাণঘাতী আক্রমণ। বাম জমানার ৩৪ বছরে বহু বার অভিযোগ উঠেছে বামফ্রন্টের বড় শরিক সিপিআই(এম)-এর হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন সিপিআই-য়ের কর্মী ও সমর্থকেরা। সেই সব হামলায় শুধু ঘরবাড়ি বা জমির ফসলহানীর ঘটনাই ঘটেনি, পুকুরের মাছ নষ্ট, সামাজিক ভাবে একঘরে হওয়ার পাশাপাশি খুন-জখম এবং ধর্ষণ গণধর্ষণের মতো ঘটনার মুখেও পড়তে হয়েছিল বাংলার সিপিআই-য়ের কর্মী ও সমর্থকদের। তার জেরে বাংলা থেকে ধীরে ধীরে ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছে সিপিআই-য়ের ভোট ব্যাংক। কেননা এই ঘটনায় সিপিআই-য়ের কিবা রাজ্য নেতৃত্ব, কিবা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এরা কেউই দাঁড়ায়নি ওই সব ক্ষতিগ্রস্থ অত্যাচারিত লুন্ঠিত সিপিআই কর্মী ও সমর্থকদের পাশে। দলের বিধায়ক থেকে শুরু করে সাংসদ ও মন্ত্রীরা শুধুই আলিমুদ্দিনের চাটুকার হয়ে থেকে গিয়েছেন নিজেদের পদ ধরে রাখার জন্য।

এখন চাকা ঘুরছে ফের উল্টো স্রোতে। ক্ষমতা হারিয়ে এক দশকের মধ্যে বামেরা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছেন বাংলার বিধানসভা থেকে। আগে কথায় কথায় যে বাম বড় শরিক সিপিআই(এম) বাকি সব বাম শরিকদের চুপ করিয়ে রাখত, হুমকি ধমকি দিত তাঁরাই এখন বিশ বাঁও জলে পড়ে খাবি খাচ্ছে। কথায় বলে হাতি পাঁকে পড়লে ব্যাঙেও লাথি মারে। এখন সেটাই হচ্ছে। বড় শরিককে এখন এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে কথা বলতে চাইছে না ছোট শরিক। বিধাননগর পুরনিগমের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে তাই মুখোমুখি সিপিআই(এম) ও সিপিআই প্রার্থী। এখন সিপিআই-য়ের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সিপিআই(এম)-এর কর্মীরা তাঁদের ফ্লেক্স ফেস্টুন ছিঁড়ে দিয়েছে। যদিও তা মানতে নারাজ স্থানীয় সিপিআই(এম) নেতৃত্ব।

ওই ওয়ার্ডে সিপিআই(এম)-এর প্রার্থী হয়েছেন সুকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিআই-য়ের প্রার্থী হয়েছেন সুহিতা বসুমল্লিক। অভিযোগ বৃহস্পতিবার ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় সুহিতার সমর্থনে ফ্লেক্স লাগায় সিপিআই। কিন্তু শুক্রবার দেখা যায় অধিকাংশ ফ্লেক্সই ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সুহিতার দাবি, ‘কারা এই কাজ করেছে জানি না। তবে এটা কোনও সুস্থ রাজনীতি হতে পারে না।’ ঘটনা হচ্ছে সুহিতা সরাসরি সিপিএমের নাম নিয়ে কিছু না বললেও স্থানীয় সিপিআই কর্মীদের বক্তব্য, এটা বড় শরিকেই কাজ। যদিও বিধাননগরের সিপিএম নেতা তথা রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাস বলেন, ‘এ কাজ মোটেও আমাদের কোনও কর্মী করেননি। কারও নির্বাচনী প্রচারে বাধা দেওয়া বা ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেওয়ার মতো কাজ কখনও সিপিএম করেনি, করে না এবং ভবিষ্যতেও করবে না।’ মজা হচ্ছে আগে সিপিআই(এম) চড় মারলে সিপিআই একটা রাও কাড়ত না। এখন কিন্তু চলছে সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি। স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তি ছড়াচ্ছে বামফ্রন্টে। বড় দাদার একনায়কতন্ত্র এখন আর কাজ দিচ্ছে না। ছোট ভাইও পাল্টা চোখ রাঙাচ্ছে।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

শনিবারের মধ্যে কলকাতার তাপমাত্রা পৌঁছে যাবে ৩৭ ডিগ্রির ঘরে

পাহাড়পুরে বাড়ি ভাঙার কাজ স্থগিত ,আদালতে গেলেন বাড়ির মালিক

কপালে স্টিকিং প্লাস্টার নিয়ে ইফতারে হাজির মমতা

রাজ্যে বিশেষ পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে অলোক সিনহা

ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য ছুটি পাবেন তো অফিস থেকে, জারি হয়ে গেল বিজ্ঞপ্তি

সিপিএমের হয়ে প্রচার নয়, কংগ্রেস নেতার নির্দেশ ঘিরে শোরগোল

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর