নিজস্ব প্রতিনিধি: অগ্নিপরীক্ষার মুখে বাম আর কংগ্রেস। কেননা একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরা রাজ্যের কোনও বিধানসভা কেন্দ্রেই জয়ের মুখ দেখেনি। রাজ্যের বিধানসভা থেকে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে দুই দলই। অথচ এই দুই দলই ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে হাতে হাত মিলিয়ে লড়াই করে তৃণমূলের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল। সেই লড়াইয়ে কংগ্রেস উঠে এসেছিল রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসাবে ৪৪টি আসনে জয়ের দৌলতে। বামেরা পেয়েছিল ২৬টি আসন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কিন্তু দুই দলের ঝোলাই খালি হয়ে গিয়েছে। পরিবর্তে বিজেপি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে এসেছে ৭৭টি আসন নিয়ে। আর এই জায়গাতে দাঁড়িয়েই একুশের কলকাতা পুরনির্বাচনের মুখে কঠিন লড়াইয়ের সামনে বাম আর কংগ্রেস। কেননা অনেকেই এবার আশঙ্কা করছেন বিধানসভার পরে এবার কলকাতা পুরনিগম থেকেও দুই দলই ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যেতে পারে।
এবারে বাম আর কংগ্রেসের মধ্যে কোনও জোট হয়নি। দুই দলই একক ভাবে আলাদা আলাদা ভাবে লড়াই করছে। তবে দেখা যাচ্ছে কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে অন্তত ৩৩টি ওয়ার্ডে দুই দলের মধ্যে বেশ ভালই ঘোঁট পেকেছে। একে অপরকে সমর্থন করার পাশাপাশি যৌথ প্রচারেও নেমেছে। তবে সেটা পুরোপুরি আঞ্চলিক স্তরের বোঝাপড়া। কিন্তু এই বোঝাপড়া তাঁদের জয়ের মুখ দেখাতে পারবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। ২০১৫ সালে কলকাতার পুরনির্বাচনে বামেরা পেয়েছিলেন ১৫টি আসন আর কংগ্রেস পেয়েছিল ২০টি আসন। কিন্তু এবারে এই ২০টি আসন ধরে রাখাই দুই দলের কাছেই কঠিন লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে চোখ বোলালেই দেখা যাবে এই ২০টি আসনের একটিতেও বাম বা কংগ্রেস কেউই এগিয়ে নেই। হয় সেখানে তৃণমূল লিড তুলেছে নাহয় বিজেপি। আর এখানেই এবারে বাম আর কংগ্রেসের জমি ধরে রাখার বা জমি ফিরে পাওয়ার লড়াই। সেই সঙ্গে লড়াই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করারও।
সন্দেহ নেই বিজেপি অপেক্ষা শহরে এখনও বামেদের সংগঠন অনেকটাই মজবুত। সেই কারনে নানা মহল মনে করছে মানুষ যদি বামেদের পাশে থাকে আর তাঁরা যদি নিজেদের ভোট নিজেরা দিতে পারেন তাহলে বামেরাই কিন্তু কলকাতা পুরনিগমে ফের প্রধান বিরোধী দল হিসাবেই উঠে আসতে পারে। কিন্তু প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে, মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিলে বামেদের ভবিষ্যত কী তাহলে শূন্য? শেষে কংগ্রেসের ঘরে নজর দিলে দেখা যাবে তা৬দের অবস্থা বিজেপির থেকেও খারাপ। না আছে সংগঠন না আছে জনসমর্থন। বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছেন। পুরসভার নির্বাচনে যে ঘুরে দাঁড়াবেন এমন আশা করাই বৃথা। খুব জোর গতবারের জেতে ৫টি আসনের মধ্যে হয়তো ২-১টি ক্ষেত্রে তাঁরা জয়ের মুখ দেখবেন।