এই মুহূর্তে

লক্ষ্য নয় ক্ষমতা দখল, নজরে প্রধান বিরোধী দলের পদ

কৌশিক দে সরকার:৩৪ বছর ধরে বাংলার ক্ষমতায় থাকা। তারপর ক্ষমতা হারানো পরিবর্তনের ঝড়ে। সেই থেকেই শুরু হয়েছিল রক্তক্ষরণের পালা। আবার ক্ষমতা হারানোর ১০ বছরের মধ্যে বাংলার বিধানসভা থেকে থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া। কিন্তু তারপরই শুরু পুনরুত্থানের পালা। ঘুরে দাঁড়ানোর পালা। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলার বুকে যে শতাধিক পুরসভার নির্বাচন রয়েছে সেই ভোটে তাই লক্ষ্য দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা। সেই সঙ্গে লক্ষ্য ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া ব্রিগেডকে পিছনে ফেলে রাজ্যের প্রধান বিরোধী শক্তি হিসাবে উঠে আসা। যাতে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে আবারও বাংলার বিধানসভায় ফিরে এসে প্রধান বিরোধী দলের তকমাটি ফিরে পাওয়া যায়। নজরে বামফ্রন্ট, নজরে সিপিআই(এম)।

বামেরা বাংলায় ৩৪ বছর ধরে রাজত্ব করে গিয়েছে। ২০১১ সালে তাঁদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। সেই সময় থেকেই শুরু হয় বাম ভোট কমার পালা। যা কার্যত অব্যাহত থাকে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় পর্যন্ত। অর্থাৎ দীর্ঘ এক দশক ধরে চলে বাম ভোটের অবক্ষয়। আর এই অবক্ষয়ের নিট রেজাল্ট বাংলার বিধানসভা থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া। স্বাধীনতার পরে এই প্রথম বাংলার বিধানসভা বাম বিধায়কহীন। কিন্তু সেখান থেকেও যে ঘুরে দাঁড়ানো যায় সেটা কিন্তু বামেরা দেখিয়ে দিচ্ছেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ৬ মাসের মধ্যে হওয়া ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন থেকে শুরু করে হালফিলের ৪টি পুরনিগমের নির্বাচনের ফলাফল কার্যত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে রামের ঝুলিতে চলে যাওয়া ভোট আবারও ফিরতে শুরু করেছে বামেদের ঝুলিতেই।

বাংলায় বিজেপির ভোটবৃদ্ধির মূলে রয়েছে বাম শিবিরে থাকা অন্ধ মমতা বিরোধীদের শিবির বদলের ঘটনা। এই অন্ধ মমতা বিরোধীরা ভেবেছিলেন রামের ঝুলিতে তাঁদের ভোট গেলে রাজ্যে আবারও পরিবর্তন হবে। সেই কারণেই তাঁরা শ্লোগান তুলেছিলেন, ‘আগে রাম পরে বাম’। দেখা গেল বাম ভোট রামের ঝুলিতে চলে যাওয়ায় হু হু করে বাড়ছে বিজেপির ভোটপ্রাপ্তির হার। আর ঠিক ততটাই গতিতে কমছে বামেদের ভোট প্রাপ্তির হার। শেষে কমতে কমতে বাংলার বিধানসভা থেকে একদম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া। আর এই বাম ভোট আর অন্ধ মমতা বিরোধীদের ভোটে ভর দিয়ে বিজেপির ৭৭টি আসন জিতে বাংলার প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে আসা সিপিএমের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেওয়ার কাজটাই করে দিয়েছিল। গল্পটা এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত। কিন্তু তা হয়নি। বরঞ্চ একুশের ভোটে বিজেপির পরাজয় ঘটতেই আবারও সেই বাম ভোট যা চলে গিয়েছিল রামের ঝুলিতে সেই ভোট আবারও ফেরা শুরু করে দিয়েছে।

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফের মিলিত ভোটপ্রাপ্তি ছিল ১০ শতাংশের কিছু বেশি। সেই নির্বাচনের ৬ মাসের মধ্যে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বামেরা একা লড়াই করে পেয়েছিল মাত্র ৩ শতাংশ ভোট। ওই সময়েই হওয়া সামসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রেও বাম ভোটের প্রাপ্তি একই ছিল। এর ঠিক এক মাস বাদে রাজ্যের আরও চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। দেখা যায় সেখানে গড়ে ৮ শতাংশ হারে ভোট পেয়েছে বামেরা। কিন্তু কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচনে সেই ভোটপ্রাপ্তির হার পৌঁছায় প্রায় ১২ শতাংশে। অর্থাৎ ১ মাসেই ভোট প্রাপ্তির হার বাড়ে ৪ শতাংশ। একই সঙ্গে চলতি মাসে হয়ে যাওয়া ৪টি পুরনিগমের ভোটেও দেখা যায় বামেরা গড়ে প্রায় ১০ শতাংশ ভোট পেয়েছে। কিন্তু যদি আসন সংখ্যার বিচার করা হয় তাহলে দেখা যাবে এই চার পুরনিগমের সন্মিলিত আসন সংখ্যার মধ্যে বিজেপি অপেক্ষা বামেরাই বেশি আসন পেয়েছে। অর্থাৎ এই যে শতাধিল পুরসভার নির্বাচন হতে চলেছে সেখানে কিন্তু অনেক জায়গাতেই দেখা যাবে বামেরা ক্ষমতা দখল করতে না পারলেও স্থানীয় স্তরে প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসাবে উঠে এসেছে। বামেরা যে এখনই কোনও পুরসভায় ক্ষমতা দখলের অবস্থায় নেই সেটা অতিবড় বামেরাও জানেন। তাই ক্ষমতা দখল তাঁদের লক্ষ্য নয়। লক্ষ্য তাঁদের দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা যাতে দ্রুত তাঁরা আবার রাজ্যের বিধানসভায় ফিরে এসে বাংলার প্রধান বিরোধী শক্তি হিসাবে উঠে আসে।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

শনিবারের মধ্যে কলকাতার তাপমাত্রা পৌঁছে যাবে ৩৭ ডিগ্রির ঘরে

ঘাটাল লোকসভা জিততে গেলে মানুষের ভালোবাসা আদায় করতে হবে: দেব

কৃষ্ণনগরে আবার ইডি এলে সরপুরিয়া খেয়ে যাবে, খোঁচা মহুয়ার

শেখ শাহজাহানের জামিনের আর্জি খারিজ, জেল হেফাজতের নির্দেশ

রাজ্যে বিশেষ পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে অলোক সিনহা

চাই পুরসভা, চাই পূর্ণাঙ্গ থানা, গলা তুলছে আমোদপুর

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর