নিজস্ব প্রতিনিধি: রবি সকাল থেকেই শুরু হয়ে গেল রাজ্যের ১০৮টি পুরসভায় নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ভোটগ্রহণের(Voting) প্রক্রিয়া। এদিন সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়েছে বুথে বুথে সেই ভোটগ্রহণের প্রক্রিয়া। ২ হাজার ২৭৬টি বুথে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে চলছে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। আর প্রথম্ন দুই ঘন্টার মধ্যেই একাধিক পুরসভা(Municipality) এলাকা থেকেই বিক্ষিপ্ত অভিযোগ উঠতে শুরু করে দিয়েছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে পুলিশ। অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই পদক্ষেপ নেওয়ায় কোথাও কোনও ঘটনা বড় আকার নেয়নি। অভিযোগ যেমন শাসক দলের বিরুদ্ধে উঠছে তেমনি অভিযোগ উঠছে বিরোধীদের বিরুদ্ধেও। বারাসতে ইভিএম ভেঙে দেওয়ায় যেমন এক বিজেপি(BJP) প্রার্থীকে পুলিশ আটক করেছে তেমনি উত্তর দমদম(North Dumdum) পুরসভাতেও বামেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের এজেন্টকে বুথে বসতে না দেওয়ার। নির্বাচন কমিশন(State Election Commission) জানিয়েছে প্রথম ২ ঘন্টাতেই এই ১০৮টি পুরসভায় গড়ে ১৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।
বিরোধীরা এই পুরনির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর(Central Force) ঘেরাটোপে ভোটগ্রহণ করাতে চেয়েছিল। বিজেপি সেই দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে মামলাও দায়ের করেছিল। কিন্তু কোথাও তাঁরা জয়ের মুখ দেখেনি। তাই এদিন ৪৪ হাজার পুলিশের নিরাপত্তার ঘেরাটোপে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া চলছে। তবে পরিস্থিতি সামলাবার জন্য পুলিশের পাশাপাশি র্যাফ(RAF), এসটিএফ, ইএফআর(EFR) ও কম্যান্ডোও রাখা হয়েছে। এদিন যে সব পুরসভায় ভোট হচ্ছে তার একটা বড় অংশই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। এদিন সেখানে ২৬টি পুরসভায় ভোট হচ্ছে। এরপরেই রয়েছে হুগলি জেলা। সেখানে ১২টি পুরসভায় ভোট হচ্ছে। নদিয়া(Nadia) জেলায় ভোট হচ্ছে ১১টি পুরসভায়, মুর্শিদাবাদ জেলায় ৮টি পুরসভায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ৭টি পুরসভায় ও পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৬টি পুরসভায়। এছাড়াও কোচবিহার(Coachbehar) জেলার ৬টি পুরসভায়, আলিপুরদুয়ার জেলার ২টি পুরসভায়, জলপাইগুড়ি জেলার ৪টি পুরসভায়, দার্জিলিং জেলার ১টি পুরসভায়, দুই দিনাজপুরের ৬টি পুরসভায়, মালদার ২টি পুরসভায়, বীরভূমের ৫টি পুরসভায়, পুরুলিয়া(Purulia) ও বাঁকুড়া জেলার ৩টি করে পুরসভায়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৭টি পুরসভায় এবং হাওড়া ও ঝাড়গ্রাম জেলার ১টি করে পুরসভায়।
এদিন ভোট শুরুর প্রথম ২ ঘন্টার মধ্যেই এইসব পুরসভা এলাকার একাধিক বুথ থেকে অভিযোগ উঠতে শুরু করে দিয়েছে, তবে মোটের ওপর ভোট এখনও পর্যন্ত শান্তিপূরড়ণ ভাবেই চলছে। উত্তর দমদম পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী প্রণব রায়কে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের(TMC) বিরুদ্ধে। আবার বিধিভঙ্গের জন্য জলপাইগুড়িতে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র সরকারকে ঘাড়ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। খড়গপুরের তালবাগিচা হাইস্কুলের ৮টি বুথে মোবাইল ফোন নিয়ে নজরদারি চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের এজেন্টদের বিরুদ্ধে। উত্তর ব্যারাকপুরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। আবার বারাসাত(Barasat) পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বুথে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে আছাড় মেরে ইভিএম(EVM) ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় তাঁকে আটক করেছে পুলিশ। আরামবাগ পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বসন্তপুরে বুথের বাইরে সিপিএম প্রার্থী সুশীল বাউড়িকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির কর্মীদের বিরুদ্ধে। বহরমপুর পুরসভার একাধিক বুথ থেকে কংগ্রেস এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গেরুয়া ব্রিগেডের বিরুদ্ধে। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যানিধি স্কুলে বহিরাগতরা এসে বাম, কংগ্রেস, নির্দল প্রার্থীর এজেন্টদের মারধর করে বুথ থেকে বের করে দেওয়ায় সেই ঘটনার রিপোর্ট চাইল নির্বাচন কমিশন।