নিজস্ব প্রতিনিধি: মাত্র ৩৩ বছর বয়সেই প্রয়াত হয়েছেন কিংবদন্তি মার্শাল আর্ট শিল্পী তথা অভিনেতা ব্রুস লি-র। যাঁর আলাদা করে পরিচয় দেওয়ার বোধহয় দরকার নেই। বর্তমান প্রজন্মের কাছে হয়তো মার্শাল কিং-এর দক্ষতার বিষয়টা অধরা, কিন্তু যাঁরা মার্শালআর্ট নিয়ে পড়াশোনা করছেন তাঁদের কাছে ব্রুস লি দেবতার সমতুল্য। যাই হোক, তাঁর মৃত্যু হয়েছে তাও ৫০ বছরের উপর কেটে গিয়েছে। কিন্তু তাও বিশ্বের দরবারে তাঁর অসামান্য অবদান মানুষের কাছে তাজা। তাঁর এই ভুবনজোড়া খ্যাতির বিশেষত্ব একমাত্র অসাধারণ অভিনয় এবং মার্শালআর্ট বিদ্যা। তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু সত্যিই ভক্তদের জন্য একটি ধাক্কা ছিল।
তবে ঠিক কী কারণে তিনি মারা গিয়েছেন, তা আজও অধরা। প্রায় পাঁচদশক পর সম্প্রতি ব্রুস লি-র অকাল মৃত্যুর কারণ একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, যেখান থেকে জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত জল পানের কারণে ১৯৭৩ সালের জুলাইয়ে হংকংয়ে ব্রুস লির মৃত্যু হয়েছে। তবে তাঁর মৃত্যুর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছিল যে, অভিনেতা সেরিব্রাল এডিমা জনিত কারণে মারা গিয়েছেন। বছরের পর বছর ধরে, লির মৃত্যু নিয়ে গবেষণা চলছিল। যার ফলে প্রকাশ্যে এসেছিল বেশ কয়েকটি তত্ত্ব। তবে গবেষকদের একটি দল এখন বলছে, লির মৃত্যু শোথ হাইপোনেট্রেমিয়ার কারণে হয়েছিল।
গবেষকরা ক্লিনিকাল কিডনি জার্নালে উল্লেখ করেছেন যে, “আমরা মনে করছি যে, কিডনির অতিরিক্ত জল নিষ্কাশনের অক্ষমতার কারণে ব্রুস লি মারা গিয়েছেন।” অভিনেতা প্রচুর পরিমাণে জল পান করতেন। এমনকী তিনি দৈনন্দিন খাবারেও তরলযুক্ত খাবার খেতেন। সুতরাং তিনি খাবারের চেয়ে বেশি জলপান করতেন। অতিরিক্ত জল খাওয়ার জন্যই অভিনেতার শরীরে কিডনির কর্মহীনতার রূপ নিতে শুরু করেছিল, যার কারণে তাঁর কিডনি পর্যাপ্ত জল নিষ্কাশন করতে পারেনি। এমনকী লি গাঁজা খেত, যা তাঁকে বেশি তৃষ্ণার্ত করে রাখত সারাক্ষণ। যার কারণে তিনি জল খেতেন ঘন ঘন।
গবেষকরা লিখেছেন, “অতিরিক্ত জল জল খাওয়া হাইপোনাট্রেমিয়া, সেরিব্রাল এডিমা মানুষকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যেতে পারে। আমরা যে ৬০ শতাংশ জল খেয়ে থাকি, তা কিডনির অতিরিক্ত জল নির্গমন করতে পারে। কিন্তু তার চেয়ে বেশি জল খেলে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে, সেটিই আরও একবার প্রমাণ করল ব্রুস লি-র মৃত্যু।” প্রয়াত মার্শাল আর্ট কিংবদন্তী সবসময়ই বলতেন, “জল আমার বন্ধু”। “কিন্তু অতিরিক্ত জল শেষ পর্যন্ত তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।’