নিজস্ব প্রতিনিধি: তারকাদের সম্পর্কের নানা ওঠা-নামার খবর লেগেই রয়েছে। বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির তুখোড় অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। যেমন সুদর্শন তিনি, তেমনি শান্ত-সুলভ মিষ্টি ব্যবহার তাঁর। যদিও তাঁর কেরিয়ার শুধুমাত্র ছোটপর্দায় আটকে নেই। বহু ছবিতেও তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে। তবে টেলিভিশন হোক বা সিনেমার পর্দা, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ‘ভাল মানুষ’-এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। বরাবরই স্পষ্ট বাদী এই অভিনেতা। সোজা কথা বলেন। তবে পেশাগত জীবনে তিনি সফল হলেও ব্যক্তিগত জীবনে অসফল। জীবনে ভরসা করে বার বার ঠকেছেন। দু’বার বিয়ে করেছেন, কিন্তু দু’বারই ঠকেছেন। প্রথম স্ত্রীর জন্য দুদিন জেল খাটতেও হয়েছিল তাঁকে! তবে প্রথমবার আঘাত পেয়েও তিনি দ্বিতীয় বার ভরসা করেছিলেন উত্তম কুমারের নাতনি নবমিতা চট্টোপাধ্যায়কে। সেখানেও ঠকলেন। বেশি আঘাত বোধহয় তাঁর কাছেই পেয়েছেন ভাস্বর। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে ভাস্বর বলেন, নবমিতাও তাঁকে ঠকিয়েছে।
হানিমুনে গিয়ে সে তাঁকে জানায়, অন্য কারও সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে আছে। বাড়ির চাপে তাঁকে বিয়ে করেছেন। এরপর তিনি সংসার করতে চাইলেও বছর দু’য়েক আগেই তাঁদের ডিভোর্স হয়ে যায়। এই নিয়ে কম গালমন্দ শুনতে হয়নি ভাস্বরকে। ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মীরাই তাঁকে বিঁধে কথা বলেছেন অলওয়েজ। কেউ তাঁকে বলেছেন, ‘ভাস্বরের তো বিয়ে টেকে না, ও কেমন ছেলে কে জানে!’ কিন্তু আসল ঘটনাটাই কেউ জানে না। সবাই ভাবেন ভাস্বরই ঠিক নয়। সেই মারধর করত বউদের। ভাস্বরের প্রথম বিয়ে হয়েছিল ২০০৬ সালে। প্রথম স্ত্রী ছিলেন প্লাবনী মুখোপাধ্যায় ছিলেন টালিগঞ্জের বাসিন্দা। খবরের কাগজ দেখে বিয়ে। কিন্তু সেই বিয়ের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র চার মাস। ভাস্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, বধূ নির্যাতন। বিয়ের তিন মাসের মাথায় প্রেগনেন্ট হয়ে যায় তাঁর স্ত্রী। তখন ভাস্বর ছিলেন শুটিংয়ে লন্ডনে। স্বাভাবিকভাবেই আনন্দ হচ্ছিল তাঁর। কিন্তু বাড়িতে ফিরে অভিনেতা জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রী গর্ভাবস্থার খবর পাওয়ার পরেই বেরিয়ে যেতেন। একদিন ভাস্বর জানতে পারেন তাঁর স্ত্রী গর্ভপাত করিয়ে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেছেন। এরপরই বাড়ি চলে যান স্ত্রী। পরে বলেন, তাঁকেও বাড়ি থেকে জোর করে বিয়ে দিয়েছে। এরপর একদিন আচমকাই ভাস্বরের বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন অভিনেতার প্রথম স্ত্রী।
৪৯৮(এ) ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। দু’রাত জেলে কাটান। তবে জামিন পেয়েও হাজিরা দিতে যেতে হত। শেষে তিনি জিতে গেলেও তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে যায়। এই ঘটনার ৭ বছর পর উত্তমকুমারের নাতনি নবমিতা চট্টোপাধ্যায়কে বিয়ে করেন ভাস্বর। পছন্দ করেই বিয়ে করেন নবমিতাকে। বিয়ের আগে ভাল করে চিনে জেনে নেন, কিন্তু নবমিতাও ঠকিয়েছেন তাঁকে। ২০০৩ সাল থেকে তাদের পরিচয় ছিল। ২০১৩ সালে তাঁরা যখন আঞ্চলিক সেন্সর বোর্ডের সদস্য ছিলেন তখনই তাঁদের ভালোবাসা হয়। এরপর মাস পাঁচেকের মধ্যে বিয়ে হয়ে যায় তাঁদের। সব ভালই চলছিল। কিন্তু বিশাখাপত্তনমে হানিমুনে গিয়ে ভাস্বরকে নবমিতা জানান, তিনি অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে আছেন। শুধুমাত্র বাড়ির চাপেই ভাস্বরকে বিয়ে করেছেন। এ কথা শুনে ভাস্বর তাঁকে চলে যেতে বললেও কেচ্ছার ভয়ে ভাস্বরের সঙ্গেই থেকে যায় নবমিতা। এরপর চলল অভিনয়ের সংসার। ভাস্বরের সঙ্গে বাইরে যেত না নবমিতা। কারণ তাঁর প্রেমিক রাগ করবে।
এরপর সংসার চালিয়ে গেলেও নবমিতা অভিনেতার বাবা-মাকে ছাড়তে বলেছিলেন। যদিও তাতে রাজি হননি ভাস্বর। পাঁচ বছর সংসারের সময় নবমিতা কুটোটি নাড়তেন না। তবে নবমিতাকে খুবই ভালোবাসতেন ভাস্বর। তবে ক্যামেরার সামনে অনেকবার ভাস্বরকে অপমান করেছে নবমিতা। একসময় ভাস্বরের মা মারা যায়। তখন বেশিরভাগ সময়টা প্রেমিকের বাড়িতে কাটাত নবমিতা। তখন নবমিতার ভাই গৌরব ও তাঁর বোনের ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপরও কিছুদিন ভাস্বরের সঙ্গে নবমিতা ঘর করলেও শেষে বাধ্য হয়েই নবমিতাকে ডিভোর্স দেয় ভাস্বর। তবে এখনও যোগাযোগ আছে নবমিতার সঙ্গে ভাস্বরের। নবমিতা চলে যাওয়ার পর আত্মহত্যা করবেন ভেবেছিলেন ভাস্বর। কিন্তু কাশ্মীর তাঁকে সব ভুলিয়ে দেয়।