নিজস্ব প্রতিনিধি, বাংলাদেশ: গোটা বিশ্বে ধনকুবেরদের তালিকায় বেশিরভাগ স্থান পুরুষদের। সেখানে নারীর সংখ্যা নেই বললেই চলে। তবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরা এখনও পিছিয়ে রয়েছে, এই ধারণা ভুল। সেটাই প্রমাণ করল বিবিসি। সম্প্রতি ২০২৩ সালের ১০০ জন প্রভাবশালী ও অনুপ্রেরণাদায়ী নারীর নাম ঘোষণা করেছে বিবিসি। সেই একশো জন নারীদের মধ্যেই জায়গা করে নিয়েছেন, বাংলা দেশের জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি পেশাগত নিরিখে একাধারে চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক ও মানবাধিকারকর্মী। যা কিনা বাংলাদেশের গর্বকে রীতিমতো স্পর্শ করেছে। এ বছরের বিবিসির এই তালিকায় আরও আছেন, প্রাক্তন মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, মেয়েদের ব্যালন ডি’অর জয়ী আইতানো বনমাতি, AI বিশেষজ্ঞ টিমনিত জিবরু, হলিউড অভিনেত্রী আমেরিকা ফেরেইরাও। সেই তালিকায় নিজের নাম তুলতে সক্ষম হয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌস। তবে ব্যক্তিগত জীবনটা তাঁর বিষাদভরা।
তাঁর মুখের সিংহভাগ অগ্নিদগ্ধ। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, জান্নাতুল ফেরদৌসের শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল আগুনে। আর নিজের শরীরের এই বিকলাঙ্গতাকে জয় করে তিন তাঁর পেশা আরও শক্তিশালী করেন। তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ, লেখালেখির পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের অধিকারের বিষয়েও কাজ চালিয়েছেন। এছাড়াও তিনি ভয়েস অ্যান্ড ভিউজ নামের একটি মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। যে প্রতিষ্ঠানে অগ্নিদগ্ধ নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা হয়। বিবিসির প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় নাম ওঠার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। বিবিসি কর্তৃপক্ষ তিন সপ্তাহ আগে জানতে চেয়েছিল, এই তালিকায় আমার নাম উঠলে আপত্তি আছে কি না। এটা খুবই খুশির খবর।’
তবে সূত্র অনুযায়ী, বিবিসির এই স্বীকৃতির পেছনে প্রাধান্য পেয়েছে তাঁর মানবাধিকার ভিত্তিক কাজগুলি। তিনি বলেন, তাঁর সংগঠনের মূল কাজ আগুনে দগ্ধ নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এই নারীদের সচেতন করতে উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন কাজ করেন তাঁরা। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এসব নারীর ইস্যু তুলে ধরা। ২০১৫ সাল থেকে তিনি এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আছেন। এছাড়াও জান্নাতুল ফেরদৌস ইতিমধ্যেই তিনটি উপন্যাস লিখে ফেলেছেন, পাঁচটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র তৈরি করেছেন। এছাড়া তিনি এখন ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করেছেন।