নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রয়াত হলেন নাট্যব্যক্তিত্ব মায়া ঘোষ। শনিবার সন্ধে সাতটা পঁয়তাল্লিশ মিনিটে শ্রীরামপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন নাট্য বিভাগের অভিভাবক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। বিনোদন জগতে একের পর এক শোকের ছায়া। চলতি বছরের শুরু থেকেই বিনোদন জগত হারিয়েছে এক একজন তারকাদের। নাট্য জগতের কিংবদন্তি মায়া ঘোষের পরিবার সূত্রের খবর, বেশ কিছু মাস বয়সজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। অবশেষে শনিবার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মায়া দেবী। বাংলা নাট্যজগতের এক উল্লেখযোগ্য নাম মায়া ঘোষের। বলা চলে, বাংলার থিয়েটার মহলে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
উৎপল দত্ত প্রতিষ্ঠিত ‘পিপলস লিটল থিয়েটার’-এর সদস্য হিসেবে নাট্যজীবন শুরু করেছিলেন তিনি। এরপর ষাটের দশকে ‘সাঁওতাল বিদ্রোহ’ নাটকের জনপ্রিয় মুখ হয়ে উঠেছিলেন মায়া দেবী। পুরুষ অভিনেতাদের সঙ্গে রীতিমতো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অভিনয় করে গিয়েছেন তিনি। ১৯৪৩ সালের ১ জানুয়ারী বাংলাদেশের খুলনা জেলার সাতক্ষীরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। প্রচণ্ড অর্থাভাবে ছোটবেলা কেটেছে তাঁর। সেই কারণে ক্লাস নাইনেই সংসারের হাল ধরেছিলেন তিনি। পাড়ার থিয়েটার দিয়েই শুরু পথচলা। এরপর অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত,অরুণ মুখোপাধ্যায়,সুনীল বন্দোপাধ্যায়সহ বহু নির্দেশকের অধীনে কাজ করেছেন তিনি।
তাঁর কেরিয়ারের উল্লেখযোগ্য নাটকগুলির মধ্যে রয়েছে, ‘রাজরক্ত’, ‘বেলা অবেলার গল্প’, ‘সাঁওতাল বিদ্রোহ’, ’দুই মহল’, ‘বদনাম’, ’অংশীদার’, ’বিসর্জন’, ’মরুঝঞ্ঝা’, ’অর্ধাঙ্গিনী’। এছাড়া ‘বেলা অবেলার গল্প’ নাটকে তাঁর অভিনয় তাঁকে এনে দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ নাট্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার৷ নান্দীকারের প্রযোজনায় মায়ার প্রথম অভিনয় ‘নাট্যকারের সন্ধানে ছ’টি চরিত্র’। যেখানে তাঁর অভিনয় নজর কেড়েছিল। জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরেই বয়সজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। রবিবার বেলা ১১ টা নাগাদ কিংবদন্তির মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছে অ্যাকাডেমি চত্বরে। সেখানেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া বাংলা নাট্য জগতে।