নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্যারাকপুর: পেশায় তিনি শিক্ষক, তাও আবার রসায়নের! ছোট বেলায় যে স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন সেই স্কুলেই শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর হাত ধরে অনেকেই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন।শিক্ষকতার পাশাপাশি রাজনীতির জগতেও ছিল তাঁর অবারিত বিচরণ। ছয়-ছয়বার ব্যারাকপুর লোকসভা আসনে জিতে সংসদেও গিয়েছিলেন। নব্বইয়ের দশকে তিনি ছিলেন শিল্পাঞ্চলের বেতাজ বাদশা। যদিও এখন অনেকটাই নিষ্প্রভ। এবার সেই তড়িৎ তোপদারের রাজনৈতিক জীবনের চড়াই-উতরাইয়ের গল্প নিয়েই তথ্যচিত্র তৈরি হচ্ছে। তাও সেই তথ্যচিত্র তৈরি করছেন তড়িৎবাবুর দলের এক নম্বর ঘোষিত শত্রু তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা তথা ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী।
সূত্রের খবর, শুক্রবারই ব্যারাকপুরে তড়িৎ তোপদারের বাড়িতে গিয়ে দু’ঘন্টার মতো বৈঠক করেছেন টলিউডের অন্যতম সফল পরিচালক। শুনেছেন অনেক অজানা গল্প। বদলে যাওয়া ব্যারাকপুরের ইতিহাস শুনেছেন। বোঝার চেষ্টা করছেন। যদিও তথ্যচিত্র তৈরির বিষয়টি নিয়ে দুই তরফের কোনও তরফের পক্ষ থেকেই মুখ খোলা হয়নি। তবে ব্যারাকপুরের বিধায়ক ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছেন, রাজনীতির সঙ্গে পেশাগত জীবনকে কখনই ঘুলিয়ে ফেলতে রাজি নন।
ব্যারাকপুরের এককালীন বেতাজ বাদশা তড়িৎ তোপদারের জীবন বড্ড বর্ণময়। জন্ম বাংলাদেশের ময়মনসিংহে হলেও খুব ছোট্ট বয়সেই ভারতে চলে এসেছিলেন তিনি। তারপর ব্যারাকপুরই তাঁর স্থায়ী নিবাস। ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সিপিএমের দাপুটে নেতা হয়ে ওঠেন। ১৯৯৭ সালে ব্যারাকপুরের মন্মথনাথ বয়েজ স্কুলের শিক্ষক পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরেই রাজনীতিই হয়ে ওঠের তাঁর ধ্যানজ্ঞান। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে না থাকলেও নানা সময়ে সংবাদের শিরোনামে বার বার উঠে এসেছেন।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে ব্যারাকপুরের বর্তমান সাংসদ অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে তাঁর বৈঠক ঘিরেও তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তড়িৎবাবুর সম্পর্কে আজও অনেক তথ্য আমজনতার কাছে অজানা। সেই তথ্যই রাজ চক্রবর্তীর তথ্যচিত্রের মূল উপজীব্য হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।