১৯৮৬: ইংল্যান্ড-আর্জেন্টিনা কোয়ার্টার ফাইনাল
নিজস্ব প্রতিনিধি: ক্রিকেটে যেমন ভারত-পাকিস্তান, ফুটবলে তেমন আর্জেন্টিনা-ইংল্যান্ড। ফকল্যান্ড নিয়ে দুদেশের লড়াই প্রভাব ফেলেছিল ক্রীড়াঙ্গনেও। তাই দু’দলের খেলাকে আর খেলা রাখেনি, রীতিমতো যুদ্ধে পরিণত করেছে। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরে ইংল্যান্ড বনাম আর্জেন্টিনার ম্যাচ ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছিল। আর সেই জায়গা করে নিয়েছিল ফুটবলের ঈশ্বরপুত্র দিয়েগো মারাদোনার করা বিতর্কিত গোলের কারণে।
গ্রুপ লিগে পোল্যান্ড আর প্যারাগুয়েকে হারিয়ে শেষ আটে উঠেছিল ববি রবসনের দল। মেক্সিকোর অ্যাজটেকা স্টেডিয়ামে কার্যত রণংদেহী মনোভাব নিয়ে নেমেছিলেন দুই দলের ফুটবলাররা। আর গ্যালারিতেও কার্যত একই মনোভাব নিয়ে প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটিয়েছিলেন দুই দেশের সমর্থকরা। জেতার জন্য ম্যাচের শুরু থেকেই ঝাঁপিয়েছিল আর্জেন্টিনা ও ইংল্যান্ডের ফুটবলাররা। বেশ কয়েকটি সুযোগ পেলেও কোনও দলই বিপক্ষের জালে বল গলাতে পারেনি। গোলশূন্যভাবেই শেষ হয়েছিল প্রথমার্ধের খেলা।
দ্বিতীয়ার্ধে বাড়তি উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দু’দলের খেলোয়াড়রা। ম্যাচের ৫১ মিনিটে ইংল্যান্ডের হজ নিজেদের পেনাল্টি বক্সের দিকে তুলে দিয়েছিলেন বল। আর সেই বল দখলের জন্য ঝাঁপিয়েছিলেন ব্রিটিশ গোলরক্ষক পিটার শিলটন এবং দিয়েগো মারাদোনা। আর তখনই হাত দিয়ে বল ইংল্যান্ডের গোলে পাঠালেন ফুটবলের রাজপুত্র। গোটা স্টেডিয়াম মারাদোনার গোলচুরি দেখতে পেলেও মাঠে বাঁশিমুখে যিনি ছিলেন সেই তিউনিশিয়ার রেফারি আলি বেন নাসেরের চোখ এড়াল এমন ঘটনা। গোলের বাঁশি বাজালেন তিনি। শিল্টন-হডল নালিশ জানালেও কর্ণপাত করেননি নাসের। ওই গোলের চার মিনিট বাদেই নিজেদের অর্ধ থেকে বল নিয়ে পায়ের জাদুতে ইংল্যান্ডের চার ফুটবলার বিয়ার্ডসলে, রিড, বুচার এবং ফেনউইককে পেরিয়ে পিটার শিল্টনকে পরাস্ত করে ফের জালে বল গলালেন মারাদোনা। ফুটবলের রাজপুত্র ওই এক গোলেই খলনায়ক থেকে স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজার-হাজার দর্শকের কাছে নায়ক হয়ে গেলেন। মারাদোনার পায়ের জাদু দেখে যেন সন্মোহিত হয়ে পড়লেন ইংল্যান্ডের ফুটবলাররাও। শেষের দিকে ৮১ মিনিটে গ্যারি লিনেকার গোল করে ব্যবধান কমালেন। ওই গোল খাওয়ার পরেই রক্ষণ আগলাতে নিজেদের উজাড় করে দিলেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। নির্ধারিত সময়ে আর গোল শোধ করতে পারেননি লিনেকার-ফেনউইকরা।