নিজস্ব প্রতিনিধি: নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা আর কড়া চাহনিকে ফাঁকি দিয়ে গর্ভবতী স্ত্রী-সহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে উত্তর কোরিয়া ছেড়ে পালালেন কিম। চলতি বছরে তিনিই একমাত্র ব্যাক্তি যিনি কিমের দেশ ছেড়ে পালাতে সক্ষম হয়েছেন। আর ওই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘করোনা অতিমারীরর প্রকোপ শুরু হওয়ার পরেই প্রাণঘাতী ভাইরাসের থাবা রুখতে গোটা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করে দিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার স্বৈরশাসক কিম উং জন। কোনও দেশ থেকে যাতে না কেউ না ঢুকতে পারে এবং বেরোতে পারে, তার জন্য নিরাপত্তার কড়া বেষ্টনী গড়ে তুলেছিলেন। আর ওই সিদ্ধান্তের ফলে হাঁফিয়ে উঠেছিলেন উত্তর কোরিয়ার বাসিন্দারা। কিন্তু সেই কড়া পাহারাকে ফাঁকি দিয়েই পালিয়েছিলেন কিম। জীবনকে বাজি ধরে উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে নিজের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশ ছেড়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সিওলে পৌঁছেছেন।’
‘বিবিসি’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশ ছেড়ে পালানোর লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন কিম। জানিয়েছেন, দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য কয়েক মাস ধরে পরিকল্পনা করেছিলেন। প্রথমে একটি ছোট নৌকা জোগাড় করেন। ওই নৌকায় চড়ে বসার পরে বাচ্চাদের পুরনো বস্তার ভিতরে লুকিয়ে রেখেছিলেন। পুরুষ সদস্যদের প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল ধারালো অস্ত্র। আর মহিলাদের দেওয়া হয় বিষের বড়ি, ডিমের খোসায় ভরা লঙ্কা গুঁড়ো আর বালি। যাতে ধরা পরলে সেগুলি উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তা রক্ষীদের মুখে ছুড়ে দেওয়া যায়। বিপদে যাতে না পড়তে হয় তার জন্য দেশ ছেড়ে পালানোর সময়ে কলসিতে ভর্তি করে নিয়েছিলেন বাবার চিতাভস্ম। উত্তাল সমুদ্র পাড় দেওয়ার সময়ে প্রতি মুহুর্তেই আতঙ্কে ছিলেন, ‘হয়তোবা জলেই সলিল সমাধি ঘটবে। যদিও তেমন কিছু ঘটেনি।’