নিজস্ব প্রতিনিধি: খ্রিস্টধর্মগুরু যিশুখ্রিস্টকে ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্যের জন্যে ইন্দোনেশিয়ার একজন মুসলিম ট্রান্সজেন্ডার মহিলাকে প্রায় ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি রাতু থালিসা নামক ওই ট্রান্সজেন্ডার মহিলা সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে এসে যিশুখ্রিস্টের একটু ছবি দেখিয়ে বলেন, তিনি যিশুখ্রিস্টের লম্বা চুল কেটে ফেলা উচিত নয়তো তিনিই কেটে দেবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। প্রায় ৫ লক্ষ অনুসারী রয়েছে তাঁর। তাঁর এই ভিডিওটি ভাইরাল হতেই রে রে করে ছুটে আসেন নেটিজেনরা। এবং বিষয়টি চোখের আড়াল হয়নি।ইন্দোনেশিয়ার প্রশাসকেরও। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সুমাত্রা দ্বীপের মেদান শহরের একটি আদালত রাতুকে এই জঘন্যতম অপরাধের জন্যে ২ বছর ১০ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

তাঁকে সমাজের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অভিপ্রয়াস এবং ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় সৌন্দর্য বিষয়ক একাধিক ব্লগ বানিয়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এবং তিনি সৌন্দর্যের একাধিক পণ্যও বিক্রি করতেন। গত বছর অক্টোবরে ফেসবুক লাইভের সময় রাতুর একজন অনুসারী বলেছিলেন, তিনি দেখতে একজন পুরুষের মতো। তাই তাঁর লম্বা চুল কাটা উচিত। সেই অনুসারীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাতু তাঁর ফোনে যিশুখ্রিস্টের ছবি দেখিয়ে বলেন, তাঁর চুল কেটে ফেলা হলে যিশুখ্রিস্টেরও লম্বা চুল কেটে ফেলা উচিত। ভিডিওটি ভাইরাল হতেই রাতুর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে। এবং তাঁকে তিনবছরেল কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর শাস্তির বিরোধিতা করেছেন অনেকেই।

কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়াকে পাত্তা না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে। তাঁকে ইলেকট্রনিক তথ্য এবং লেনদেন সংক্রান্ত আইনের অধীনে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আসলে ইন্দোনেশিয়া ধর্মপ্রাণ দেশ, এখানে ঈশ্বরকে এক এবং অদ্বিতীয় মানা হয়। এখানে কোনও নির্দিষ্ট রাষ্ট্রধর্ম নেই। তবে দেশটি ইসলাম, খ্রিস্টধর্ম, হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্মকে সরকারি ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই রাতুর যিশুখ্রিস্টকে নিয়ে এমন অশ্লীল মন্তব্যের জন্যে তাঁকে ধর্মীয় অবমাননা আইনের অধীনে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।