নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কোথায় কোথায় পারমাণবিক বোমা এবং অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে পাকিস্তান, ভারত-পাক যুদ্ধের আবহে গোপণ তথ্য সামনে এল। যদিও কোথায় পারমাণবিক বোমা এবং অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে পাকিস্তান, তা বলা কঠিন! তা সত্ত্বেও কয়েকটি বাণিজ্যিক উপগ্রহ থেকে পাওয়া চিত্রে পাকিস্তানের লুকিয়ে রাখা পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভাব্য অবস্থান জানা গিয়েছে। FAS (ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্টস)-এর একটি প্রতিবেদন অনু সারে, স্যাটালাইট ছবিতে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি স্থানে পারমাণবিক বোমা, পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র, এবং পারমাণবিক অস্ত্র সংরক্ষণের জন্যে বেশ কয়েকটি বিমানঘাঁটির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সুতরাং এই প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের উপর চাপ আরও বাড়তে চলেছে। তবে পাকিস্তানের গোপনীয় ক্ষেপণাস্ত্র গুলি তেমন শক্তিশালী নয়, কিন্তু পাকিস্তান সেনারা নিজেদের রক্ষার্থে এবং সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে এই পারমাণবিক অস্ত্রগুলি ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে। সুতরাং তাই ভারতের উপর চাপ বাড়তে চলেছে।

FAS এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনার সঠিক পরিসংখ্যান এবং অবস্থান এখনও জানা যায়নি। কিন্তু বাণিজ্যিক স্যাটালাইটের তোলা ছবিতে বেশ কয়েকটি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, পাকিস্তানের কমপক্ষে পাঁচটি জায়গায় পারমাণবিক বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র লুকিয়ে রাখা হয়েছে। যার মধ্যে আছে, আকরো, গুজরানওয়ালা, পানো আকিল, এবং সারগোধা সেনা পোস্ট। এছাড়াও বাহওয়ালপুরও ষষ্ঠতম ঘাঁটি হতে পারে। গাজি খানের ডেরা সপ্তম ঘাঁটি হতে পারে। তবে সব ঘাটির পরিকাঠামো আলাদা।

পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ তুলতে মঙ্গলবার পাকিস্তানে বিমান অভিযান চালায় ভারত। পহেলগাঁও হামলার ষড়যন্ত্রকারী জঙ্গিদের ৯ টি আস্তানা গুড়িয়ে দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী এবং বিমান বাহিনীর একটি যৌথ দল। এরপর থেকেই প্রতিশোধ তুলতে ভারতের সীমান্ত অঞ্চলে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। কিন্তু ভারতও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। অপারেশন সিঁদুর- অভিযানে লাগাতার চলছেই। ইতিমধ্যেই ১০০ সন্ত্রাসীকে নিধন করেছে ভারত। গতকাল রাতে একাধিক মিসাইল ছুড়েছে ভারত।যাতে ভয় পেয়ে দেশ ছাড়ে পাক সেনাপ্রধান অসিভ মুনির। কিন্তু ভারতের উপর বদলা নিতে একের পর এক গুটি সাজাচ্ছে পাকিস্তান। কিন্তু ভারতের সমর্থনে রয়েছে বিশ্বের একাধিক দেশ। সেটাই প্রমাণ করল আরেকবার। এবার স্যাটালাইটের মাধ্যমে পাকিস্তানের গোপনা পারমাণবিক বোমা লুকিয়ে রাখার তথ্য দিল আমেরিকা।

জায়গাগুলি ভারতের থেকে কতটা দূরে অবস্থিত?

আক্রো গ্যারিসন: ঘাঁটিটি হায়দরাবাদ থেকে প্রায় ১৮ কিমি (১১ মাইল) উত্তরে, সিন্ধু প্রদেশের দক্ষিণ অংশে আক্রো এবং পেতারোর মধ্যে, ভারতীয় সীমান্ত থেকে প্রায় ১৪৫ কিমি (৯০ মাইল) দূরে অবস্থিত। এই গ্যারিসনটি ৬.৯ বর্গকিলোমিটার (২.৭ বর্গমাইল) এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।

গুজরানওয়ালা গ্যারিসন: এই বৃহৎ বেস কমপ্লেক্সটি প্রায় ৩০ বর্গকিলোমিটার (১১.৫ বর্গমাইলে) এলাকা জুড়ে অবস্থিত এবং এটি পাঞ্জাব প্রদেশের উত্তর-পূর্ব অংশে (32.2410, 74.0730) অবস্থিত, যা ভারতীয় সীমান্ত থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে। ২০১০ সাল থেকে, ঘাঁটিটি কমপ্লেক্সের পশ্চিম অংশে একটি TEL লঞ্চার এলাকা যুক্ত করেছে।

খুজদার গ্যারিসন: এখন পর্যন্ত স্থাপিত ক্ষেপণাস্ত্র পোস্টগুলির মধ্যে, খুজদার গ্যারিসন দক্ষিণ-পূর্ব বেলুচিস্তান প্রদেশের সুক্কুর থেকে প্রায় ২২০ কিলোমিটার (১৩৬ মাইল) পশ্চিমে অবস্থিত যা ভারতীয় সীমান্ত থেকে সবচেয়ে দূরে (২৯৫ কিলোমিটার বা ১৮৩ মাইল)।

পানো আকিল গ্যারিসন: পানো আকিল গ্যারিসনটি বিভিন্ন বিভাগে বিভক্ত, যার সম্মিলিত এলাকা প্রায় ২০ বর্গকিলোমিটার (৭.৭ বর্গমাইল)। এটিতে প্রধান গ্যারিসন এলাকা, একটি TEL এলাকা, একটি গোলাবারুদ ডিপো, একটি বিমানঘাঁটি এবং একটি শুটিং রেঞ্জ রয়েছে। এই ঘাঁটিটি সিন্ধু প্রদেশের উত্তর অংশে অবস্থিত, ভারতীয় সীমান্ত থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) দূরে।

সারগোধা গ্যারিসন: এই স্থাপনাগুলি ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে তৈরি, যখন পাকিস্তান প্রথম চিন থেকে M-11 ক্ষেপণাস্ত্র (DF-11 বা CSS-7) অর্জন করে, যা এখন পাকিস্তানের গজনভি এবং শাহীন-1 স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে ব্যবহৃত হয়।