নিজস্ব প্রতিনিধি: চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের তত্ব থেকে আমরা জানতে পেরেছি, মানুষের একটা সময়ে লেজ ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই লেজ হারিয়ে গিয়েছে। কিন্তু মানুষের শরীর থেকে লেজ নামক অঙ্গটি হারিয়ে গেল কেন, সেই উত্তর বহু বছর থেকেই থুঁজে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি এক গবেষণায় সেই উত্তর মিলেছে বলেই দাবি করেছেন গবেষকরা।
সম্প্রতি ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত নেচার ম্যাগাজিনে একটি গবেষণামূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ব্রড ইনস্টিটিউটের বো জিয়া জানিয়েছেন, একটি গুরুত্বপূর্ণ জেনেটিক পরিবর্তন চিহ্নিত করা গিয়েছে। এক জিনের ভিতরে একক রূপান্তর ঘটতে দেখা গিয়েছে। এই জেনেটিক পরিবর্তনই মানুষের লেজ বিলুপ্ত হওয়ার জন্য দায়ী। জানা গিয়েছে, গবেষণা করার জন্য বিজ্ঞানীরা মানুষ সহ ছয় প্রজাতির বন মানুষ ও ১৫টি প্রজাতির লেজযুক্ত বানরকে নিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা করা হয়েছে। সেখানেই এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে। ইঁদুরের ভ্রুণের মধ্যে এই একই ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে কিনা, সেটিও পরীক্ষা করে দেখা হয়। সেটা দেখার জন্য জিন সংক্রান্ত প্রযুক্তি সিআরআইএসপিআর ব্যবহার করা হয়। সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করেও দেখা গিয়েছে, ওই ভ্রুণ থেকে যে সব ইঁদুরের জন্ম হয়েছে, তাদেরও লেজ নেই।
লেজ না থাকার কারণে মানুষের কী কী সুবিধা হয়েছে সেই বিষয়টিও স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, লেজ না থাকার কারণে ধীরে ধীরে মানুষ সোজা হয়ে হাঁটতে শিখেছে। এই প্রসঙ্গে স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিশনের হিউম্যান অরিজিন্স প্রজোক্টের পরিচালক রিক পটস মনে করেন, মানুষের পূর্বসূরি হিসাবে পরিচিত কিছু বনমানুষ লেজ না থাকার কারণে লম্বালম্বিভাবে শারীরিক ভঙ্গিতে অভ্যস্ত হতে শিখেছে। তবে এখনও পর্যন্ত কিছু বনমানুষ রয়েছে যারা মাটিতে বসবাস করে না। তাঁরা গাছে থাকতেই অভ্যস্ত।