নিজস্ব প্রতিনিধি, কলম্বো: বোরকা ও মুখ ঢাকা পোশাক নিষিদ্ধের পরে এবার শ্রীলঙ্কায় নিষিদ্ধ হচ্ছে গো-হত্যা। ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভা এ সংক্রান্ত আইনের খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। মন্ত্রিসভায় পাশ হওয়ার পরে এবার আইন প্রণয়নের জন্য ওই প্রস্তাব সংসদে পেশ করা হবে। শ্রীলঙ্কা সরকারের পক্ষ থেকে গো-হত্যা বন্ধের আইন প্রনয়ণের পিছনে যুক্তি দেখানো হয়েছে, এতে দেশের গবাদি দুগ্ধ ও শিল্প উপকৃত হবে। যদিও গো্হত্যা নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে বেজায় চটেছে দেশের মুসলিম সম্প্রদায়।
দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার জনসংখ্যার ৭০ শতাংশই বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। বৌদ্ধদের একাংশ গরু নিধনের বিপক্ষে হলেও দেশের বেশিরভাগ মানুষই মাংসভোজী। শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনই নয়, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের একাংশও গরুর মাংস খান। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কায় প্রথম গো-হত্যা বন্ধের দাবি ওঠে। সে সময় সংসদ সদস্য ভিজেদাসা রাজাপাক্ষে এসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সংসদে তুলেছিলেন। তবে তাঁর সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। ২০১২ সালে ক্যান্ডি শহরের কর্তৃপক্ষ পৌর এলাকার মধ্যে গরু জবাই নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। পরের বছর এনিয়ে দেশজুড়ে তীব্র বিতর্ক দেখা দেয়। গো-হত্যা বন্ধের দাবিতে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই ঘটনার পরেই কট্টরপন্থী সিংহলী বৌদ্ধ সংগঠন সিনহালা রাভায়া এবং বদু বালা সেনা গো-হত্যা বন্ধের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাক্সে ২০১৬ সালের প্রস্তাবটিকে নতুন করে সংসদে তুলে আনেন এবং আইন প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করেন।
তবে দেশে গো-হত্যা নিষিদ্ধ করার মতো সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব হয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়। একাধিক মুসলিম সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, শ্রীলঙ্কায় গোমাংসের ব্যবসা এবং হালাল সার্টিফিকেশনের নিয়ন্ত্রণ মুসলিমদের হাতে। ফলে প্রস্তাবিত আইনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে মুসলিম সম্প্রদায়।