এই মুহূর্তে




স্টিফেন কোর্ট কেড়েছিল ছেলের প্রাণ, ক্ষতিপূরণ চেয়ে রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী সবার দফতরে চিঠি বৃদ্ধ বাবার




নিজস্ব প্রতিনিধি: বেশ ভাল একটা চাকরি পেয়ে সংসারের হাল ধরেছিল ২২ বছরের ছেলেটি। এরপর দু’বছর বেশ ভালই চলল। চোখে কত স্বপ্ন। শুধু সেই ছেলেটি স্বপ্ন দেখে না, তার সঙ্গে স্বপ্ন দেখেন তার মা-বাবাও। আচমকা সব স্বপ্ন চিতাভস্মের রূপ নিয়ে এসে দাঁড়ালো সামনে। ২২ বছরের সংসারের হাল ধরা ছেলেটি আর নেই। আচমকা সে অতীত।

যারা নিয়মিত খবর পড়েন তাঁরা তো বটেই, যারা পড়েন না তাঁরাও হয়তো ভোলেননি ১৫ বছর আগে কলকাতার বুকে ঘটে যাওয়া বিভীষিকাময় অগ্নিকাণ্ডকে। ২০১০ সালের ২৩ মার্চ পার্কস্ট্রিটের বহুতল স্টিফেন কোর্টে আগুন লাগে। তাতে ঝলসে–পুড়ে, বাঁচার জন্য অনেক উঁচু থেকে লাফ দিয়ে পড়ে এবং দমবন্ধ হয়ে মারা যান মোট ৪৩ জন। তাঁদেরই একজন সৌরভ বারিক। ১৫ বছর কাটলেও ছেলের অফিস থেকে একটি টাকাও ক্ষতিপূরণ স্বরূপ পাননি তাঁর বাবা মা।

স্টিফেন কোর্টের আটতলায় একটি বেসরকারি সংস্থার অফিসে কাজ করতেন সৌরভ। বাড়িতে বাবা শৈলেন বারিক ও মা কবিতা বারিক। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চাকরি পান সৌরভ। ২ বছর পর আচমকা ছন্দপতন। স্টিফেন কোর্টে আগুন লাগল এবং অকালে চলে গেলেন ২২ বছরের যুবকটির।

তার পর থেকে পেরিয়েছে ১৫টা বছর, কিন্তু সৌরভের কর্মস্থল বেসরকারি সংস্থাটি শৈলেন ও কবিতা বারিককে কোনও ক্ষতিপূরণ দেননি বলে অভিযোগ। গত ১৫ বছর ধরে বৃদ্ধ একের পর এক চিঠি লিখে চলেছেন। কখনও রাষ্ট্রপতি ভবনে, কখনও প্রধানমন্ত্রীর দফতরে, আবার কখনও নবান্নে। কিন্তু উত্তর আসেনি। মেলেনি ক্ষতিপূরণও।

প্রথম দিকে সৌরভের কর্মস্থল বেসরকারি কোম্পানিটি জানিয়েছিল ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কিন্তু সে সবই তো মৌখিক আশ্বাস। লিখিত তো কিছুই নেই। তাই একসময় কোম্পানি পরিষ্কার জানিয়ে দেয় ক্ষতিপূরণ তারা দেবে না।

অগ্নিকাণ্ডের কিছু কাল পর রাজ্যের তৎকালীন সরকারের কাছ থেকে কলকাতা পুলিশের মাধ্যমে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন সৌরভ বারিকের মা ও বাবা। ওইটুকুই, আর একটি টাকাও কোনও জায়গা থেকে বাড়তি মেলেনি।

একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পরে ইচ্ছাপুরের দম্পতি দত্তক নেন ৩ বছর ৩ মাসের এক শিশুকে। এ বছর সে উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছে। যে স্কুলে সৌরভ পড়তেন, সেই স্কুল থেকেই পড়িয়েছেন ছোট ছেলেকে। কিন্তু এখন বয়স বেড়েছে, রোজগার নেই, কী করে চালাবেবন ছেলের পড়াশোনা?

শৈলেন বারিকের কথায়, ‘আমার ছেলের ইএসআই ছিল। আমি ২০১৩ সালে মামলা করেছিলাম পেনশনের জন্য। সেই মামলাও চলছে। এত চিঠি লিখছি। কেউ কি উত্তর দেবেন না? আমাদের মতো আরও কয়েক জন এই সমস্যায় ভুগছেন। আমাদের কি বিচার পাওয়ার অধিকার নেই?’

স্টিফেন কোর্ট বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন বেসরকারি অফিসে যারা চাকরি করতেন তাঁদের অনেকেরই মৃত্যু হয়েছিল বিধ্বংসী আগুনে। কিন্তু তাঁদের অধিকাংশেরই পরিবার ক্ষতিপূরণ পাননি। প্রথম দিকে স্টিফেন কোর্টের সামনে জমায়েত হত, প্রতিবাদ চলত।

সময়ের সঙ্গে সবই যেন ফিকে হয়ে গিয়েছে। সন্তানহারা বাবার চিঠির উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা , সদিচ্ছা এবং সময় হয়তো পাবেন না ভারতের রাজনীতিবিদরা। তবুও আশায় বুক বাঁধবেন এক ৬৫ বছরের বৃদ্ধ, স্বপ্ন দেখবেন ছোট ছেলেকে নিয়ে এক নতুন দিনের।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

সদ্য বিবাহিত দিলীপকে আমন্ত্রণ জানাল রাজ্য সরকার, দিঘার মন্দির উদ্বোধনে কি থাকবেন তিনি?

পহেলগাঁও হামলার জের, রাজ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের বৈঠক, নজরে সীমান্ত

কালবৈশাখীর সতর্কতা, দক্ষিণের কোন জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস

জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য অতিরিক্ত লোকাল ট্রেন রবিবার চালাবে পূর্ব রেল

মহিলার স্তনে হাত দেওয়ার চেষ্টা ‘ধর্ষণ ‘না, ‘চরম যৌন নির্যাতন’ বলে অভিমত কলকাতা হাইকোর্টের

শহিদ জওয়ান ঝন্টু শেখের স্ত্রীকে সরকারি চাকরি দেওয়ার ঘোষণা মুখমন্ত্রীর

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর