24ºc, Haze
Thursday, 23rd March, 2023 4:09 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: বাম জমানার ৩৪ বছরের সন্ত্রাসের ছবিই আবার ফিরে এল কী বাংলার(Bengal) বুকে? এই প্রশ্নটাই এবার উঠে এল রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর(State Food Minister) রথীন ঘোষের(Rathin Ghosh) বিধানসভা কেন্দ্র মধ্যমগ্রামের(Madhyamgram) বুক থেকে রাজ্য রাজনীতিতে। বাম জমানায় প্রকাশ্য দিবালোকেই আমজনতার গায়ে হাত তুলতে দেখা যেত পাড়ার লালপার্টির(CPIM) নেতা থেকে কর্মীদের। পুরুষ, মহিলা কেউ বাদ যেতেন না সেই সব আক্রমণ থেকে। মুখ বুজে মেনে নিতে হত সেই সব অত্যাচার। পাড়ার সেই সব হার্মাদ-জল্লাদ নেতারাই এখন তৃণমূলের(TMC) সম্পদ হয়ে জোড়াফুল শিবিরে শোভা পাচ্ছে এমন অভিযোগ বার বার তুলছেন বাংলার বাম বিরোধীরা। যদিও সেই সব ঘটনা কোনওদিনই স্বীকার করেনি তৃণমূল। কিন্তু শনিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মধ্যমগ্রামে এক যুবককে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর সামনেই সপাটে চড় খেতে হল এক তৃণমূলকর্মীর হাতে। কেননা ওই যুবক এলাকার রাস্তা নিয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন মন্ত্রীর উপস্থিতিতে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচীতে।
আরও পড়ুন মোদির বন্ধ করে দেওয়া পড়ুয়া বৃত্তি এবার দেবেন মমতা
আর এই ঘটনার জেরেই এখন রাজ্য রাজনীতিতে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এক, তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কী সিপিএমের হার্মাদ জল্লাদদের মতোই নিজেদের গড়েপিঠে নিয়েছেন নাকি? আমজনতার গায়ে হাত তোলার অধিকার তাঁদের কে দিয়ে দিল? আমজনতার সম্যা কী সেটা জানার জন্যই ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচীর আয়োজন। সেই জায়গায় মানুষ ওই কর্মসূচীতে গিয়ে যদি তৃণমূলেরই নেতাকর্মীদের হাতে চড় থাপ্পড় খান তাহলে তাঁরা যাবেন কেন সেই কর্মসূচীতে? সব থেকে বড় কথা রাজ্যের খাদ্যম্নতড়ীর সামনে এই ঘটনা ঘটার পরেও কেন গ্রেফতার করা হল না ওই তৃণমূলকর্মীকে? মধ্যমগ্রামের দত্তপুকুর এলাকায় শনিবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে। সংবাদমাধ্যমে সেই চড় মারার ভিডিও রীতিমত ভাইরালও হয়েছে। ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। ঘটনার জেরে মন্ত্রী নিজে স্বীকার করেছেন ভুল হয়ে গিয়েছে। কিন্তু গায়ে হাত উঠবে কেন সেই ঘটনার ব্যাখা না তিনি দিতে পেরেছেন না সেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশকে কোনওরকম নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন রাজ্যের স্কুলে স্কুলে টিভি লাগিয়ে দেখাতে হবে ‘পরীক্ষা পে চর্চা’
জানা গিয়েছে শনিবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দত্তপুকুর থানার ইছাপুর নীলগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাইবনা গ্রামে দলের কর্মসূচী পালনে গিয়েছিলেন রথীনবাবু। সেই সময় ওই এলাকারই বাসিন্দা সাগর বিশ্বাস মন্ত্রীর সামনে গিয়ে এলাকার রাস্তা খারাপ থাকা নিয়ে অভিযোগ জানান। সেই সময়েই প্রথমে তৃণমূল কর্মীদের কাছে শাসানি জোটে। পরে তাঁকে কষিয়ে থাপ্পড়ও মারেন এক স্থানীয় কর্মী। পরে ধাক্কা দিতে দিতে ঘটনাস্থল থেকে বারও করে দেওয়া হয় সাগরকে। শুধু তাই নয় ওই ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে আক্রান্ত যুবক যাতে কোনও কথা না বলেন তা নিয়েও ওই তৃণমূল কর্মীরা সাগরকে হুমকি দেন। যদিও পরে সাংবাদিকদের কাছে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পরে আক্রান্ত যুবকের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে নেন মন্ত্রী রথীন। কিন্তু ওই অভিযুক্ত তৃণমূলকর্মীকে গ্রেফতারের কোনও নির্দেশই দেননি তিনি পুলিশকে। বরঞ্চ তিনি জানান, সাগর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন। এখানেও প্রশ্ন উঠেছে, কেউ যদি শাসক দলের কর্মসূচীতে কোনও ব্যক্তিগত সমস্যার ইস্যু তুলে ধরেন তাহলে কী তাঁকে চড় মারতে হবে? চড় মারার এই ক্ষমতা তৃণমূলকর্মীদের কে দিল?