নিজস্ব প্রতিনিধি: ২৪’র মহাযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে বিজেপি(BJP) বিরোধী দলগুলি জোট বাঁধছে। সেই জোট গড়ে উঠছে পরষ্পরের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের ওপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) দেখানো রাস্তার ওপরেই। যে যেখানে শক্তিশালী সেখানে সেই লড়বে বিজেপির বিরুদ্ধে। আগামী ১২ জুন বিহারের রাজধানী পাটনায়(Patna) সেই জোটের প্রথম বৈঠকও বসতে চলেছে। সেখানে তৃণমূল(TMC) ছাড়াও থাকছে দেশের সব বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলিও। কিন্তু বামেরা ও কংগ্রেস(INC) সেই বৈঠকে যোগ দেবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ঠিক এই প্রেক্ষাপটে বাংলার বুকে কংগ্রেসের একমাত্র বিধায়কের তৃণমূলে যোগদান, কিছুটা হলেও অস্বস্তিকর পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। যদিও তৃণমূলের সর্মভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee) জানিয়েছেন, তিনি কংগ্রেস কেন, কোনও দলই ভাঙাননি। বায়রণ বিশ্বাস(Bairon Bishwas) নিজেই এসেছেন তাঁর কর্মসূচীতে। তৃণমূলে যোগদানও তাঁর ইচ্ছাতেই।
আরও পড়ুন সাগরদিঘী মডেল ফেল মানতে নারাজ বামেরা, নীচুতলা বলছে ভিন্ন কথা
ঠিক কী জানিয়েছেন এদিন অভিষেক বায়রণ বিশ্বাসের দলবদল প্রসঙ্গে? পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালে সাংবাদিক সম্মেলনে বায়রণকে পাশে নিয়ে অভিষেক জানিয়েছেন, ‘সাগরদিঘিতে জয়ের পর বহুবারই আমার সঙ্গে বায়রণের দেখা হয়েছে। আমি যেহেতু জনসংযোগ যাত্রায় রয়েছি তাই বিভিন্ন ক্যাম্পে আমার সঙ্গে ওর দেখা হয়েছে। কথা হয়েছে। আমি দল ভাঙাইনি। বায়রণ নিজে এসে নবজোয়ার মঞ্চে এই ঘাটালে তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়েছে। আমি দল ভাঙাতে চাইলে সাগরদিঘিতে দাঁড়িয়েই বায়রণ বিশ্বাসকে যোগ দেওয়াতাম। কিন্তু আমি সেটা করিনি। সাগরদিঘির রামধনু জোট যে অন্তঃসারশূন্য তা তো বোঝাই গিয়েছিল। ২০২১ সালে ওরা কী করেছে। লড়াইটা ছিল বিজেপি বনাম তৃণমূল। কংগ্রেস, বাম, আইএসএফ জোট করে কাদের সুবিধা করে দিয়েছে সেটা সবাই দেখেছে। এখন এটা তো হওয়ারই ছিল। বায়রণের তৃণমূলে আসা অস্বাভাবিক কোনও ঘটনা নয়। বায়রণের গোটা পরিবারই তৃণমূল কংগ্রেস ঘেঁষা। এর আগেও তৃণমূলে যোগদানের জন্য ও বহুবার যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু সেটা শেষ পর্যন্ত ফলপ্রসূ হয়নি। রবিবার রাতে ও ফোন করায় আমি তাঁকে ডেকেনি।’
আরও পড়ুন অভিষেকের পাশে বসে অধীরকেই কাঠগড়ায় তুললেন বায়রণ
প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব বা রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা কিন্তু এদিনের ঘটনায় রীতিমত ক্ষিপ্ত। এমনকি এই দাবিও উঠেছে যে, পাটনায় আগামী ১২ জুন যে বিজেপি বিরোধী দলগুলির জোট বৈঠক আছে তা যেন বয়কট করা হয়। সেখানে কংগ্রেসের কোনও নেতা বা প্রতিনিধি যেন না যায়। যদিও শেষ পর্যন্ত বাংলার কংগ্রেস নেতাদের এই আবদার কংগ্রেস হাইকম্যান্ড রাখবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে বাংলার বুকে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্ক যে সুস্থ স্বাভাবিক পথে হাঁটা দেবে না সেটাও পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। বরঞ্চ আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে হারাতে গ্রামে গ্রামে, ব্লকে ব্লকে, জেলায় জেলায় বাম-বিজেপি-কংগ্রেসের মহাজোট দানা বাঁধার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে গেল। যদিও এক্ষেত্রেও প্রশ্ন থাকছে। যে সাগর দিঘী মডেলে বায়রণে জিতিয়েছিল ৩ দলের অঘোষিত জোট সেই মডেলেই পঞ্চায়েত ভোটে যদি কোথায় সাফল্যের মুখে দেখাও যায়, তারপরেও সেই সাফল্য ধরে রাখতে পারবেন তো বাম-কংগ্রেস ও বিজেপির নেতারা? নাহলে কিন্তু বায়রণের দেখানো পথ ধরেই তাঁরাও তৃণমূলে যোগ দিয়ে জোড়াফুলের হাতে বোর্ড তুলে দেবেন!