নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত ঘাড় ধাক্কা খাওয়ার এক বছরের মাথায় বৃহস্পতিবার সকালে বাংলায় আবার পা পড়ল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির(BJP) নম্বর টু নেতা অমিত শাহের(Amit Shah)। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ‘আবকে বার ২০০ পার’ শ্লোগান তোলা অমিত এবার তাঁর বঙ্গ সফরে কোন ভোকাল টনিক দলের নেতা থেকে মন্ত্রী ও সাংসদদের দেন সেটা দেখার জন্যই তাকিয়ে থাকবেন সকলে। তবে তাঁর এই সফর ঘিরে নানা অভিযোগে ও বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করে দিয়েছে। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দিল্লি থেকে বিশেষ বিমানে কলকাতার(Kolkata) দমদম বিমানবন্দরে এসে নামেন অমিত শাহ। তাঁকে স্বাগত জানাতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক(Nishith Pramanick)। সুকান্ত ও নিশীথ অমিতকে পুষ্পস্তবক দিয়ে স্বাগত জানান, সেই সময় শুভেন্দুকে আবার দেখা যায় শাহের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে।
দমদম থেকেই হেলিকপ্টারে করে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জে পৌঁছান শাহ। সঙ্গে ছিলেন শুভেন্দু ও নিশীথ। এই দুই নেতাই শাহের গোটা সফরে তাঁর সঙ্গী হিসাবে থাকছেন। হিঙ্গলগঞ্জে বিএসএফের ৮৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের ৬টি ভাসমান আউটপোস্ট উদ্বোধন করে শাহ জলপথেই রওয়ানা দেন জেলার বনগাঁ মহকুমার হরিদাসপুর এলাকায়। পথে তিনি ইচ্ছামতী নদীর ওপর থেকেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা পরিদর্শনও করেন। বনগাঁতে তিনি বিএসএফের একটি সংগ্রাহালয়ের শিলান্যাস করবেন। এদিকে শাহের উত্তরবঙ্গের সফর ঘিরে দুটি ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। একটি ঘটনা পাহাড়ের, অন্যটি তিনবিঘা করিডরে। কর্মসংস্থানে সরকারি প্রতিশ্রুতি কার্যকর না-হওয়ায় ফুঁসছে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে ছিটমহল থেকে ভারতে আসা মানুষজনও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তিনবিঘা করিডর পরিদর্শনে আসছেন এই খবরে তাঁরা উত্তেজিত। ছিটমহল ভারতে অর্ন্তভুক্তির পর সেখানকার মানুষের আর্থিক সাহায্য ও কমর্সংস্থানের দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যেই মেখলিগঞ্জের তিন বিঘা করিডরে শহিদ বেদি ঘিরে পোস্টার দেওয়া হয়েছে। আবার পাহাড়ে নতুন করে আলাদা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পোস্টার পড়েছে। এ বার হোতা হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ভারতীয় গোর্খা সুরক্ষা পরিষদ। এক মাস আগেই পাহাড়ের বুকে এই নয়া সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করেছে।
এদিকে শাহের বঙ্গ সফর ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, ‘বাংলায় এসে অমিত শাহ বলবেন, আমরা নাগরিক আইন চালু করব। আইন তৈরি হচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যে আইন তৈরি হয়ে যাবে। মানুষকে আমরা ভরসা দিচ্ছি। অমিত শাহের বক্তব্যে এই কথাগুলি না থাকলে আমার কান কেটে দেবেন। কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রীর বাংলায় আসা মানেই বিভাজনের রাজনীতি শুরু হয়ে গেল। সারা দেশের সাম্প্রদায়িক এজেন্ডা এখানে প্রয়োগের চেষ্টা চলবে। হিন্দু আর মুসলমানদের বিভাজন। কারণ সাম্প্রদায়িক বিভাজনই মোদির একমাত্র হাতিয়ার। বিভাজনের রাজনীতি করে আগামী ভোটকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবেন উনি। অমিত শাহ আসা মানেই বিভাজনের রাজনীতি শুরু। অমিত শাহ আসা মানেই এনআরসি আসবে। অমিত শাহ আসা মানেই সিএএ আসবে।’