নিজস্ব প্রতিনিধি: তুলকালাম ঘটে গেল বাংলার বিধানসভায়(State Legislative Assembly)। রাজ্য বিধানসভায় অধ্যক্ষের উপস্থিতিতে অধিবেশন কক্ষে মেঝেতে ফেলে তৃণমূল(TMC) বিধায়ক অসিত মজুমদারকে মারধর করার অভিযোগ উঠল বিজেপি(BJP) বিধায়কদের বিরুদ্ধে। এর থেকেও বড় বিষয় বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন খোদ অসিতবাবু(Asit Majumdar)। হুগলি জেলার চুঁচুড়ার এই বর্ষীয়ান তৃণমূল বিধায়ক অভিযোগ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, ‘শুভেন্দু ঘুঁষি মেরে আমার নাক ফাটিয়ে দিয়েছে।’ ঘটনার জেরে অসিতবাবুকে রাজ্য বিধানসভা ভবন থেকে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে করে এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল বলেই জানা গিয়েছে। তবে তাঁর নামে অস্ত্রপচারের সম্ভাবনা রয়েছে।
ঠিক কী অভিযোগ করেছেন অসিতবাবু? তৃণমূলের এই বিধায়ক জানিয়েছেন, ‘মহিলা বিধায়কদের হেনস্থা করা হচ্ছিল। সেইসময় প্রতিবাদ করায় শুভেন্দু(Suvendu Adhikari) আমার নাকে ঘুষি মারে। শুভেন্দু ঘুঁষি মেরে আমার নাক ফাটিয়ে দিয়েছে। বিজেপির বিধায়কেরা আমায় অধিবেশন কক্ষের মেঝেতে ফেলে মারধর করেছে।’ এদিন বিধানসভায় বিজেপির বিধায়কেরা বকটুই নিয়ে আলোচনা চেয়েছিলেন। সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরেই ওয়ালে নেমে বিজেপির বিধায়কেরা হইহট্টগোল জুড়ে দেন। সেই সময় তৃণমূলের মহিলা বিধায়কেরা ও বিধানসভার মহিলাকর্মীরা অধ্যক্ষকে ঘিরে একটি ঘেরাটোপ তৈরি করে নেন। বিজেপি বিধায়কেরা তা দেখেই ওই ঘেরাটোপ ভাঙতে উদ্যত হলে মহিলাদের সঙ্গে তাঁদের ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়ে যায়। সেই সময় অসিতবাবু বিজেপি বিধায়কদের মহিলাদের ধাক্কাধাক্কি করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। সেই সময়েই তাঁকে পাল্টা মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে।
এদিন বিধানসভা ভবন থেকে হাসপাতালে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের জানান, ‘আমাদের মহিলাদের মারছিল। আমি তখন হাতজোড় করে বলতে গিয়েছি যে, মেয়েদের গায়ে হাত দিও না। সেই সময় শুভেন্দু নিজে আমাকে ঘুঁষি মারল। টেনে ঘুঁষি মারল আমার নাকে।’ ঘটনার জেরে তৃণমূলের অপর বিধায়ক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের জানান, ‘ওঁর নাক দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। এই ঘটনা গণতন্ত্রের লজ্জা। শুভেন্দু অধিকারী ওঁকে শুধু ঘুঁষিই মারেননি, তলপেটে লাথিও মেরেছেন।’ ঘটনার জেরে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সাসপেন্ডের প্রস্তাব আনেন। সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেন অধ্যক্ষও। তারপরেই শুভেন্দু সহ ৫ বিজেপি বিধায়ককে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়। রাজ্য বিধানসভায় এই ঘটনার জেরে এদিন চুঁচুড়ায়(Chinsurah) বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। চুঁচুড়া শহরের পিপুলপাতি মোড় থেকে ঘড়ির মোড় পর্যন্ত হয় বিক্ষোভ মিছিল। তাতে যোগ দেন হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান এবং কাউন্সিলররাও।