নিজস্ব প্রতিনিধি: দিল্লি গিয়েছিলেন তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা নিয়ে। সেই ইস্তফা দেওয়ার জন্য লোকসভার স্পিকারের কাছ থেকে সময় চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু স্পিকার ওম বিড়লা তাঁকে সময় দেননি। আর সেই কারনে তাঁরও এখনও ইস্তফা দেওয়া হয়নি। দলবদল করলেও এখনও তিনি আসানসোলের বিজেপি সাংসদ। দিল্লি ফেরত সেই বাবুল এবার একধার থেকে আক্রমণ শুরু করলেন বিজেপির প্রতি। আর সেই আক্রমণের জন্য বাবুল বেছে নিলেন যাদনপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাম ছাত্র সংগঠনের হাতে তাঁর ঘেরাও ও নিগৃহ হওয়ার ঘটনা।
বাবুল এখনও সরকারি ভাবে খাতায়কলমে বিজেপির সাংসদ। সেই বিজেপিকেই এদিন বাবুল আক্রমণ করলেন একদম অপ্রত্যাশিত ভাবেই। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে এবিভিপির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন বাবুল। সেখানে গিয়ে তিনি বাম ছাত্র সংগঠনের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকেন সেখানে। শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে যান আচার্য জগদীপ ধনখড়। কার্যত তাঁর হস্তক্ষেপেই মুক্তি পান বাবুল। সেই পুরো ঘটনা নিয়ে এদিন বিজেপি নেতাদের তোপ দেগেছেন বাবুল। বলেছেন, ‘সে দিন তো কোনও বিজেপি নেতা এগিয়ে আসেননি। বাড়িতে বসে মজা দেখছিলেন সবাই। দেখছিলেন, বাবুল কেমন মার খাচ্ছে। অথচ আমি কিন্তু সেখানে মন্ত্রী হিসাবে যাইনি। খুব সাধারণ ভাবে গিয়েছিলাম। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেস্টে কত বার গাইতে গিয়েছি। তাই খুব সাধারন ভাবেই গিয়েছিলাম। অথচ সেখানেই কিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা আমাকে আক্রমণ করেছিল। ওরা অবশ্য বাবুল সুপ্রিয়কে আক্রমণ করেনি, করেছিল আমার রাজনৈতিক দলকে। কিন্তু আমি মাঠ ছাড়িনি। কই এক জনও বিজেপি-র নেতা তো আসেননি সেই সময়ে। উল্টে সিপিএম-তৃণমূলের অফিস ভাঙচুর করে আমাকে অস্বস্তিতে ফেলা হয়েছিল।’
এবিভিপি’র যে অনুষ্ঠানে গিয়ে বাবুল এই বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন সেই ঘটনাতেই সামনে এসেছিল একটি ছবি। যেখানে দেখা গিয়েছিল একটি বন্দুকের ম্যাগাজিন মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। সে প্রসঙ্গেও এদিন মুখ খুলেছেন বাবুল। বলেছেন, ‘আমার সঙ্গে তো জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তারক্ষীরা ছিল। ওদের একটি বন্দুকের ম্যাগাজিন খুলে পড়ে গিয়েছিল। সেটা নিজে এসে ফেরত দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। ওঁর সঙ্গে আমার একটা ছোট তর্ক হয়েছিল। আমি উপাচার্যকে বলেছিলাম, যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকতে চাই। উপাচার্য আমাকে বলেছিলেন, দোতলায় উঠে ওঁর সঙ্গে বসতে। আমি যেতে চাইনি। ওইদিন আমায় একটা ছেলে চুলের মুঠি ধরে মেরেওছিল। ওই ছেলেটার ছবি, পরিচয় সব আমার কাছে আছে। ঘটনার পরের দিন ওই পড়ুয়ার মা আমাকে ফোন করেছিলেন। বলেছিলেন, ওকে যেন ক্ষমা করে দিই। আমি তো আজ পর্যন্ত কোনও পুলিশে অভিযোগ করিনি। ক্ষমা করেছিলাম। কী হল? শতরূপ ঘোষ, ওই বামপন্থী! তিনি ছেলেটাকে বসিয়ে বললেন, যত বার বাবুল-সুপ্রিয় আসবে, তত বার চুলের মুঠি ধরে টানব। এই জন্যই বামেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নেই। বাংলার বিধানসভায় আজ তাঁরা শূন্য।’