নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজেপির বিরোধীরা বরাবরই পদ্মশিবিরকে গডসেপন্থী বলে উল্লেখ করে এসেছে। মোদি জমানায় সেই কটাক্ষ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। অথচ সেই মোদির জমানাতেই শুরু হল বঙ্গ বিজেপিতে মহাত্মা গান্ধির মৃত্যুদিন পালনের পালা। রবিবার ৩০ জানুয়ারি, জাতির জনকের মৃত্যুদিন। এদিনই প্রথমবার বঙ্গ বিজেপির কার্যালয়ে পালিত হল মহাত্মা গাঁধীর মৃত্যুদিন। শুধু পালিত হওয়াই নয়, বঙ্গ বিজেপি এইদিনটিকে ‘বলিদান দিবস’ হিসাবেও পালন করছে। কিন্তু এবার সেই মহাত্মা গান্ধির মৃত্যুদিন পালন নিয়েই এবার বিজেপিকে কটাক্ষ হানতে ছাড়লেন না তথাগত রায়। সাফ জানালেন, গান্ধিজির মৃত্যুদিন পালনের আয়োজন বিজেপি-র পরম্পরা নয়।
১৯৪৮ সালের এই দিনেই নাথুরাম গডসের হাতে নিহত হন জাতির জনক। গডসে ছিলেন আরএসএসের সদস্য। আর সেই আরএসএস-ই হল বিজেপির প্রাণশক্তি। তাই বিজেপিতে কোনও কালেই গান্ধির মৃত্যুদিন পালনের হিড়িক ছিল না। কিন্তু মোদি জমানায় খোলনলচে বদলে যাচ্ছে বিজেপির। সেই বদলের ছবিই ধরা পড়েছে বঙ্গ বিজেপির কার্যালয়ে। সেখানে এদিন পালিত হয়েছে মহাত্মা গান্ধির মৃত্যুদিন। একই সঙ্গে লক্ষ্যণীয় বিজেপিতে দলের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যদিনকেই ‘বলিদান দিবস’ হিসাবে এতদিন ধরে পালন করা হত। এবার মহাত্মা গান্ধির মৃত্যুদিনকে সেই ‘বলিদান দিবস’ হিসাবে এখন চিহ্নিত করা হল। আর এও ঘটনার জেরেই এখন প্রশ্ন উঠেছে, মোদির হাত ধরে বিজেপি কী শ্যামাপ্রসাদের আবেগ থেকে সরে এসে কংগ্রেসের মতো গান্ধিপন্থী হয়ে উঠতে চাইছে?
এই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। তবে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায় জানিয়েছেন, ‘মহাত্মা গান্ধির মৃত্যুদিন পালনের আয়োজন বিজেপি-র পরম্পরা নয়। বর্তমান বিজেপি কী করে, আর কী করে না তা বোঝা মুশকিল। তবে আমার আমলে এ সব হয়নি। এটা দলের পরম্পরা ভঙ্গ বলেই আমি মনে করি।’ যদিও বঙ্গ বিজেপির অপর এক প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিনহা এই ঘটনায় সম্পূর্ণ বিপরীত মত প্রকাশ করেছেন। তাঁর দাবি, ‘বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার গাঁধীজির নির্দেশিত পথে এগোচ্ছে। গাঁধীজির স্বপ্ন সফল করতেই নরেন্দ্র মোদি গ্রামোন্নয়ন থেকে স্বচ্ছ ভারতের মতো প্রকল্প নিয়েছেন। দেশজুড়ে গান্ধিজির জন্মজয়ন্তি পালনের কর্মসূচি নেয় বিজেপি। গত কয়েক বছর ধরে ওই দিনে বিজেপি নেতা, কর্মীরা খাদির বস্ত্র কেনার কর্মসূচি পালন করে আসছে। গান্ধিজির জন্মজয়ন্তি পালন করলে মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধা জানাতে সমস্যা কোথায়। বিজেপি-ই একমাত্র দল যারা জাতির জনকের দেখানো পথের একমাত্র অনুগামী। গান্ধিজির প্রতি বিজেপির শ্রদ্ধা কোনও দিন কম ছিল না, এখনও নেই।’