নিজস্ব প্রতিনিধি: পুজো আর মাত্র ১৭দিন। অথচ বাংলার বুক থেকে দুর্যোগের মেঘ সরছে না কিছুতেই। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি কমেছে কলকাতা সহ দক্ষিনবঙ্গে ঠিকই, কিন্তু এদিনও দু’এক পশলা বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে কলকাতা সহ দক্ষিনবঙ্গে। তবে চিন্তার বিষয় এটাই বঙ্গোপসাগরের ওপরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্তের সঙ্গে যোগ দিতে পারে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত যা আজ কালের মধ্যেই তৈরি হবে। এই জোড়া ঘূর্ণাবর্ত রূপান্তরিত হবে গভীর নিম্নচাপে। তারপর আগামী রবিবার তা বাংলা-ওড়িশা সীমানা ঘেঁষে ঝাড়খণ্ড ও মধ্যপ্রদেশের দিকে চলে যাবে। কিন্তু এই গভীর নিম্নচাপের জেরেই শনিবার থেকে কলকাতা সহ দক্ষিনবঙ্গের একাধিক জেলা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি ঝরতে পারে। একই সঙ্গে ছোটনাগপুর মালভূমিতে ভারী বৃষ্টি হলে তার জেরে ডিভিসি সহ অনান্য নদীর জলাধার থেকে জল ছাড়া শুরু হলে পুজোর মুখে দক্ষিনবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিন আলিপুর আবহাওয়া জানিয়েছে, মায়ানমার উপকূলে এখন অবস্থান করছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। সেটি বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে সেটি শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে স্থলভাগের দিকে আসবে বলে জানাচ্ছেন আবহবিদরা। এখনও পর্যন্ত তার গতিমুখ ওড়িশার দিকে রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তবে নিম্নচাপের প্রভাব পড়বে বাংলার ওপরেও। সেই সঙ্গে মধ্য বঙ্গোপসাগরে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেটি ক্রমে বাংলা ও ওড়িশা উপকূলের দিকে অগ্রসর হবে। এই দুই ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে শনিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। শনিবার থেকেই কার্যত কলকাতা সহ দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে।
ঝাড়খণ্ডের ওপরে এখন একটি নিম্নচাপ অবস্থান করছে। বাংলায় সক্রিয় রয়েছে মৌসুমি অক্ষরেখাও। দু’য়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর থেকে দক্ষিণবঙ্গে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকছে বাংলার পরিমণ্ডলে। তার জেরে আজ থেকে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত বিক্ষিপ্ত ভাবে বজ্রগর্ভ উলম্ব মেঘ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে দক্ষিনবঙ্গ জুড়েই। তার জেরে দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পাশাপাশি বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। তবে তা ছোট ছোট এলাকা জুড়েই হবে। কিন্তু যেখানে হবা সেখানে কার্যত ভাসাবে। আর এই ঘটনাই পুজোর মুখে কার্যত বাংলার বিপদ বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকটাই। যদিও রাজ্য সরকার সব রকম পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকছে। তবুও আমজনতার হয়রানি যে কমছে না চট করে সেটা ধরে নিতেই হচ্ছে।