নিজস্ব প্রতিনিধি: তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে রীতিমত লড়াই করে জিতেছিলেন তিনি। সাড়ে ৬ বছর ধরে আমজনতাকে যথাসাধ্য সম্ভব পরিষেবা প্রদানও করেছেন। মজবুত করেছেন দলের সংগঠনও। তবুও দল তাঁকে এবারে বঞ্চিত করেছে প্রার্থীপদ থেকে। আর তার পরে পরেই তিনি দল ছেড়ে চলে এলেন সেই তৃণমূলেই যাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে ২০১৫ সালে কলকাতা পুরনিগমের কাউন্সিলর হয়েছিলেন তিনি। নজরে কলকাতা পুরনিগমের ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাম কাউন্সিলর বিলকিস বেগম। এদিনই তিনি বাম শিবির ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিয়ে দলে নিজ অনুগামীদের সঙ্গেই যোগ দিয়েছেন তিনি।
এদিন তৃণমূলে যোগ দিয়ে বিলকিস জানিয়েছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজে অনুপ্রাণিত হয়েই দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তবে তাঁর অনুগামীদের মুখে ভিন্ন কথা শোনা গিয়েছে। বিলকিসের অনুগামীদের দাবি, বিলকিস তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করে ২০১৫ সালের ভোট জিতেছিলেন। এতদিন ধরে পরিষেবাও দিয়ে এসেছেন। ওয়ার্ডে নিজের সংগঠনও পোক্ত করেছেন। কোভিডকালে ওয়ার্ডের মানুষের পাশে থেকেছেন। তারপরেও সিপিএম এবার তাঁকে প্রার্থী করেনি। উলটে বিলকিসের জেতা ওয়ার্ডে তাঁরা ফৈয়াজ আহমেদ খানকে টিকিট দিয়েছে। বিলকিস নিজেও ভাবতে পারেননি যে দল তাঁকে টিকিট দেবে না। কিন্তু শুক্রবার বামেদের প্রার্থী তালিকায় নিজের নাম না দেখেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন দলত্যাগের। তার জেরে শনিবার সকালেই ফিরহাদ হাকিমের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে রাজনীতিতে নতুন ইনিংস শুরু করে দিলেন বিলকিস। বেমেদের বেগম এলেন মমতার দলে।
এদিন বিলকিস তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘উনি ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের সবথেকে সফল কাউন্সিলর। মানছি আমাদের বিরোধী ছিলেন, কিন্তু ওনার সফলতা নিয়ে কিছু বলার নেই। আজ উনি আমাদের দলে এসেছেন। এর থেকে খুশির আর কী বা হতে পারে। আমরা একসঙ্গে কাজ করব। এটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’ বামেরা বিলকিসের দলত্যাগের ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়লেও মুখে তা স্বীকার করতে নারাজ। তবে এটাও ঘটনা যে বিলকিসের ওয়ার্ডেই তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন ফিরহাদ ঘনিষ্ঠ নিজামুদিন শামস। তাই অন্য কোনও ওয়ার্ড থেকে এবার তাঁর টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনাও কার্যত নেই বললেই চলে। তাই তৃণমূলের অন্দরে এখন বিলকিসের কার্যত অপেক্ষা করার পালা। কবে আবার দল তাঁকে প্রার্থী করবে কোনও নির্বাচনে।