নিজস্ব প্রতিনিধি: বর্তমানে রাজনীতি মানেই দলবদলু। স্বার্থটাই মূল কথা, কে কোনদিক দিয়ে ঘাপটি মেরে দলবদলে নেবে, তা বুঝে ওঠার আগেই সবটা শেষ! লোকসভা নির্বাচনের আগে বহু নেতা দল বদলেছেন। নিজের চাহিদা না মেটাতে পারলেই ব্যস, সুযোগ সন্ধানী হয়ে ওঠেন তাঁরা। দেশের যেকোনও নির্বাচন আসার আগে সাধারণত দলবদলুর বিষয়টি আগে মাথাচারা দিয়ে ওঠে। শুরু হয়ে গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচন। প্রথম দফায় বাংলার তিন কেন্দ্রে হয়ে গেছে ভোটপর্ব। এখনও বাকি ৬ পর্বের ভোট। তার আগেই আচমকাই জেগে উঠল গুরু প্রেম, বুধবার সকাল সকাল প্রয়াত অজিত পাঁজার বাড়িতে হাজির হলেন ‘দলবদলু’ তাপস রায়। যা নিয়ে ফের সরগরম রাজনৈতিক মহল।
এদিন তৃণমূলনেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার বাড়িতে আচমকাই হানা দিয়ে তাঁর প্রয়াত শ্বশুর রাজনীতিক অজিত পাঁজার ছবিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানালেন তৃণমূলত্যাগী তাপস রায়। শুধু তাই নয়, সোমবার বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর সঙ্গে দেখা করতেও তাঁর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের মুজফ্ফর আহমেদ ভবনে পৌঁছেছিলেন তাপস রায়। বিমান বসুর পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করেছেন। তবে একেবারে বিরোধী দল বলে অসম্মান নয়, তাপস রায়কে দেখে সৌজন্য বিনিময় করলেন শশী পাঁজা। এটাই তাঁর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষা। তবে তাপস রায়ের সঙ্গে তেমন কোনও কথা হয়নি শশী পাঁজার। যদিও তাপস দু’জন বাদ দিয়ে উত্তরের সমস্ত ভোটারের কাছে ভোটপ্রার্থনা করেছেন তাপস রায়। তবে আচমকাই শশীর বাড়িতে যাওয়ার মনে হল কেন তাপসের, গুরু প্রেম জেগে উঠল কেন তাঁর? যদিও এই বিষয়ে কেউ কিছুই জানাননি। আসলে বুধবার সকালে শশী পাঁজা তাঁর অফিসে শ্যামপুকুর বিধানসভা এলাকার বিষয়ে বৈঠক করছিলেন, তখনই বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের হঠাৎ উদয় হয় তাঁর বাড়িতে। এমনিতে তৃণমূল-বিজেপি সর্বদা আদায়-কাঁচকলা। দুই দলই প্রতি মুহূর্তে একে অপরকে বিঁধছে।
কিন্তু সেই সমস্ত শত্রুতা মনে রেখেই এদিন বিজেপি প্রার্থীকে তাঁর বাড়িতে স্বাগত জানান শশী। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকেন নি তাপস রায়। শ্বশুর অজিতের ছবিতে মালা দিয়ে নমস্কার করে বেরিয়ে যান। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কি কোনও কথা হল তাপসের? শশীর উত্তর, তাঁর সঙ্গে কোনও কথা হয়নি তাপসের।যেহেতু অজিত পাঁজা তাঁর গুরু ছিলেন। তাই তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে চলে যান। অন্যদিকে শশীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে বিজেপি প্রার্থী তাপস বলেন, তাঁর সৌভাগ্য হয়েছিল অজিত পাঁজার সান্নিধ্য পাওয়ার। ১৯৭৯ সাল থেকে তাঁর এই বাড়িতে যাতায়াত ছিল। অজিতের স্ত্রীর অনেক স্নেহ-আদর পেয়েছেন। তাই এ বাড়ির সকলের সঙ্গে তাঁর ভাল সম্পর্ক। তাই ভোট প্রচারের নামে গুরু অজিত পাঁজাকেও দেখে এলেন, তাঁর ছবিতে মালা দেওয়ার সুযোগ পেলেন। শশীর কাছে ভোটপ্রচার করার বিষয়ে তাপস রায় বলেন, নিশ্চয়ই। আমার কাজই তো তাই। কলকাতা উত্তরের ১৫ লক্ষ মানুষের কাছে ভোট চাওয়া। তবে শুধু দু’জন বাদে।