নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার(Bengal) শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC) এবার ২৪’র ভোটে(General Election 2024) রাজ্যের অর্ধেক লোকসভা কেন্দ্রেই প্রার্থী হিসাবে মহিলাদের তুলে ধরতে চলেছে। এই ঘটনাকে এখন বিজেপির(BJP) কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জ হিসাবেই নিচ্ছে। সেই কারণেই দিল্লিতে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তৃণমূলের মোকাবিলায় তাঁরাও এবার রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অন্তত এক তৃতীয়াংশ আসনে মহিলা মুখ(Women Candidate) তুলে ধরবেন। অর্থাৎ, বাংলার অন্তত ১৪টি লোকসভা কেন্দ্রে মহিলা প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi), অমিত শাহ এবং জে পি নাড্ডারা। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ বঙ্গ বিজেপির একাংশ। তাঁরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই পাল্টা যুক্তি সাজিয়ে দিল্লিকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আর্জি জানাতে চলেছেন।
কেন ১৪ আসনে মহিলা প্রার্থী? বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের যুক্তি, একুশের ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Mamata Banerjee) তুলে ধরা হয়েছিল ‘বাংলার নিজের মেয়ে’ হিসাবে। সেই প্রচারের কৌশল কাজেও লেগেছে। রাজ্যের মহিলারা এককাট্টা হয়ে তৃণমূলকেই ভোট দিয়েছেন। একই সঙ্গে মমতার সরকার বাংলার মহিলাদের জন্য যে অজস্র আর্থসামাজিক প্রকল্প চালু রেখেছে তারও সুফল তৃণমূল পেয়েছে। কিন্তু তারপরেও হাত গুটিয়ে বসে থাকার জায়গা নেই। বাংলার বাড়িতে বাড়িতে যেতে হবে, মহিলাদের বিজেপিতে টানতে হবে, তা৬দের ভোট যাতে বিজেপির পক্ষে যায় সেটাও দেখতে হবে। তিন রাজ্যের বিধানসভা ভোটে বড়সড় সাফল্য পেয়েছে বিজেপি। তার পিছনে মহিলা ভোটারদের অবদান অনেকখানি রয়েছে বলে পদ্মশিবিরের অনুমান। বিশেষত, মধ্যপ্রদেশে মহিলাদের জন্য ‘লাডলি বেহনা’ ও ‘লাডলি লক্ষ্মী’ প্রকল্প দু’টির সুফল ভোটবাক্সে পেয়েছে পদ্ম। তাই বাংলাতেই তাঁরা সেই পথেই হাওয়া তুলতে চাইছে।
বঙ্গ বিজেপি আপত্তি কোথায়? বাংলার পদ্মশিবিরের একাংশের দাবি, মধ্যপ্রদেশ আর বাংলা এক নয়। যা মধ্যপ্রদেশে সাফল্য এনে দিয়েছে বাংলায় তা সাফল্যের মুখ নাও দেখতে পারে। এমনিতেই বাংলার মহিলা ভোটব্যাঙ্ক(Women Vote Bank) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পগুলি যে বাংলার মহিলাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, তা অজানা নয় কারোরই। বিজেপি এই মাঠে এখন একই রণকৌশল নিলে তাতে লাভ কী হবে? একুশের ভোটেই ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায়’ স্লোগানেই বিজেপিকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। বড়সড় অঘটন না-ঘটলে ২০২৪-এও বাংলার মহিলাদের আশীর্বাদ জোড়াফুলের দিকেই থাকবে। সেক্ষেত্রে বাড়তি মহিলা প্রার্থী নামিয়ে লাভ কী হবে। বরঞ্চ যোগ্য ব্যক্তিরা ভোটের টিকিট থেকে বঞ্চিত হবেন। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি বিষয়ই দেখা উচিত-তাঁর জেতার সম্ভাবনা কতটা। মহিলা-পুরুষ বিভাজনে না যাওয়াই ভালো। যদিও বিজেপির অন্য অংশের পাল্টা যুক্তি, তৃণমূলের মহিলা ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতে হলে মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা বাড়াতেই হবে।